জগন্নাথপুরে ৪০০ কোটি টাকার ধান উৎপন্ন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২৫, ৯:০৮:৪৭ অপরাহ্ন

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : জগন্নাথপুর উপজেলায় কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই এবার শতভাগ বোরো ফসল কর্তন শেষ হয়েছে। বাম্পার ফলনে লক্ষমাত্রা পূরণ হওয়ায় উৎপাদনকৃত ফসলের বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় উপজেলার মইয়ার হাওরের ভবানীপুর এলাকায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের উদ্যোগে ফসল কর্তন সমাপনী উৎসবের আয়োজন করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরকত উল্লাহ, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবু হুরায়রা সাদ, জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি তাজ উদ্দিন আহমদ, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সোহরাব হোসেন, উপজেলা জামাতের সেক্রেটারি মাওলানা আফজল হোসাইন প্রমুখ।
যাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক রজত গোপ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমরা এবার স্বস্তিতে গোলায় ধান তুলতে পেরেছি। বাম্পার ফলন হওয়ায় আমরা খুশি। সেই সাথে স্বস্তিতে আছেন পিআইসি কমিটির লোকজনও।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল দাশ জানান, বোরো ধান উত্তোলনের সময় অকাল বন্যায় ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে ফসলহানিসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় থাকে। এবার কোন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছাড়াই ফসল উত্তোলন হয়েছে। ফলে কৃষকদের পাশাপাশি লাভবান ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ পিআইসি কমিটির লোকজনও।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এবছর জগন্নাপুরের ছোট বড় ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ করা হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর উপজেলায় ২৪ কিলোমিটার এলাকায় ৩৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের মাধ্যমে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ হয়। বরাদ্দ মিলে ৬ কোটি ৮৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
জগন্নাথপুর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল কুমার পাল জানান, জগন্নাথপুরে ধানক্রয় কার্যক্রম জোরালোভাবে চলছে। এবার কৃষকের কাছ থেকে ১৩২৬ মেট্রিকটন ধান ক্রয় করা হবে। সরকারিভাবে ১৪৪০ টাকা মনে ধানক্রয় করায় কৃষকরা ধানের নায্যদাম প্রাপ্তি নিয়ে খুশি। কোনধরণের জটিলতা ছাড়াই তাঁরা এবারে গুদামে সরকার নির্ধারিত দামে ধান বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ জানান, গত ১৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটা শুরু হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ২০ দিনের মধ্যে উপজেলার বৃহত্তর নলুয়ার হাওরসহ ছোট-বড় ১২টি হাওরের ধান কাটা শেষ হয়। তবে বাড়ি আশপাশ ও নন হাওরে কৃষকের সুবিধা অনুযায়ী ধান কর্তনে কিছু সময় বেশি লেগেছে। এ বছর মোট ২০ হাজার ৪২৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়। শতভাগ ফসল কর্তনে উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ শত কোটি টাকা।