সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
মেজরটিলায় জায়গা বিক্রির নামে প্রবাসীর ৩৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০২৫, ১:১৮:৩৫ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : মেজরটিলায় জায়গা কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন গ্রীস প্রবাসী মুহিবুর রহমান। নগরীর বাগবাড়ী নরসিংটিলা এলাকার বাসিন্দা কামাল আহমদ ওই প্রবাসীর ৩৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
গতকাল সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মুহিবুর রহমানের স্ত্রী হাসনা বেগম।
লিখিত বক্তব্যে হাসনা জানান, তারা জগন্নাথপুর উপজেলার রৌয়াইল গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও দীর্ঘদিন ধরে সিলেট নগরীর বাগবাড়ী নরসিংটিলার একতা ৪৭/৪-বি কামাল আহমদের বাসায় বসবাস করে আসছেন। এক পর্যায়ে কামাল আহমদ ও তার স্ত্রীর সাথে পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হলে বাসার মালিক কামাল আহমদ তাকে ধর্মের বোন বানান। ২০২৪ সালের ১৫ জুন তার স্বামী দেশে এসে সিলেট শহরে জায়গা কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাসার মালিক কামাল আহমদ মেজরটিলা অন্ধ সমাজকল্যাণ মার্কেটের পাশে তার ৪ শতক জায়গা বিক্রি করতে ইচ্ছুক বলে জানান। পরবর্তীতে ওই জায়গা দেখে প্রবাসী মুহিবুর রহমানের পছন্দ হলে আলোচনা সাপেক্ষে জায়গার মূল্য ৬০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হাসনা বেগম জানান, কামাল আহমদের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক থাকায় তার প্রবাসী স্বামী সাক্ষী তোতা মিয়া, তার ভাসুর মাহবুব হোসেন জীবন ও পরিবারের সবার উপস্থিতিতে ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট ৬ লক্ষ টাকা, ১৪ আগস্ট ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ১৯ আগস্ট বাকী ২৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
এক সপ্তাহ পর অবশিষ্ট টাকা পরিশোধ হলে কামাল আহমদ জায়গা রেজিস্ট্রি করে দিবেন বলে তাদের জানান। কিন্তু হঠাৎ করে কামাল আহমদ বলেন, দেশের রাজনৈতিক অবস্থা নাজুক। তিনি আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় এই মুহূর্তে তাকে দেশ ত্যাগ করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি পারেন দেশে এসে জায়গা রেজিস্ট্রি কাজ সম্পন্ন করবেন। পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হওয়াতে তিনি সরল বিশ্বাসে তা মেনে নেন।
চলতি বছরের ১০ মার্চ কামাল আহমদ দেশে এলে জায়গা রেজিস্ট্রির কথা বললে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার ভাসুর খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন মেজরটিলার ওই ৪ শতক জায়গা কামাল আহমদের দখলে নেই। এই বিষয়ে কামাল আহমদের নিকট জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এই অবস্থায় উপায় না পেয়ে তিনি এলাকার পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী, সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান দিপু, সদস্য ফারুক আহমদ চৌধুরীকে বিষয়টি অবগত করেন। এ সময় পঞ্চায়েতের সামনে কামাল আহমদ ৩৩ লক্ষ টাকা আত্মসাতের কথা শিকার করেন এবং টাকা ফেরত দেয়ার পরিবর্তে নরসিংটিলার বাসা থেকে তাকে ৩ শতক জায়গা রেজিস্ট্রি করে দেয়ার অঙ্গীকার করেন।
হাসনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, গত ১২ মে কামাল আহমদের কাছে জায়গা রেজিস্ট্রির তারিখ জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে ৩৩ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে খুন ও গুমের হুমকি দেন। এ সময় কামালের স্ত্রী রুহেনা বেগম ও শ্যালক আওলাদ হোসেন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ করেন হাসনা বেগম। বিষয়টি পুনরায় পঞ্চায়েত কমিটিকে জানালে তাদের পরামর্শে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেন। অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগটি আমলে না নেয়ায় বাধ্য হয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালত, সিলেটে মামলা দায়ের করেন। সেই সাথে প্রতারণার অভিযোগে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। ন্যায় বিচার পেতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন হাসনা বেগম।