এক যুগে শেষ হয়নি সংস্কার কাজ
জগন্নাথপুরে শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়ক নদী ভাঙ্গনের কবলে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ৫:১৭:১৮ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ জগন্নাথপুর উপজেলার শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়কের সংস্কার কাজ গত এক যুগে শেষ হয়নি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সড়কের সংস্কার কাজ একাধিকবার শুরু হলেও কাজ আর শেষ হয়নি। সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কের একাংশ কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। ফলে যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন উপজেলার লাখো মানুষ।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, জগন্নাথপুর উপজেলা সদর থেকে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের জগন্নাথপুর শিবগঞ্জ-বেগমপুর পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য ২০০৫ সালে ৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে সড়কের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে উপজেলার পাইলগাঁও, আশারকান্দি ও রানীগঞ্জ ইউনিয়নের একাংশের মানুষের যাতায়াত সুবিধা হয়। ২০১৪ সাল থেকে সড়কটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন সড়ক সংস্কারের দাবি উঠলে ২০১৬ সালে সড়কের ১১ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও কাজ শুরু হয়। যৎসামান্য কাজ করে ঠিকাদার পালিয়ে যায়। এরমধ্যে ২০২২ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সড়কটি বিধ্বস্ত হয়। সড়কজুড়ে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে যানচলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। গত বছরের অক্টোবর মাসে আবারো সড়কের কিছু অংশে সংস্কার কাজ শুরু হয়। ঠিকাদার আংশিক কাজ করে কাজ বন্ধ করে ফেলে রাখে। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষাপটে সড়কের সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কের কাতিয়া গ্রামের পূর্ব হতে ফেচিরবাজারের পশ্চিম অংশ পর্যন্ত সড়কটি কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সড়কটির এ অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
এলাকার বাসিন্দা তরুণ সমাজকর্মী সেলিম খান জানান, প্রতিদিন এ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। সড়কটি নদী ভাঙ্গনে বিলীন হলে দুঃখকষ্টের সীমা থাকবে না। পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নজুমদ্দীন জানান, কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন থেকে সড়কটি রক্ষা করতে তিনি লিখিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জে আবেদন করেন। তারা লিখিতভাবে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট শাহীনুুর পাশা চৌধুরী বলেন, আমি সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ এনে সড়কটি বাস্তবায়ন করি। এরপর আর সড়কে কোন কাজ হয়নি। এখন সড়কটি নদী ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে। তিনি ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। অন্যথায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের উপ সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল জানান, কুশিয়ারা নদী ভাঙ্গনের রোধে ওই এলাকায় আমাদের একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। নতুন করে আরো ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় ওই এলাকায় ৬০০ মিটারের নতুন প্রকল্প অনুমোদন করে টেন্ডার করা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন দৈনিক সিলেটের ডাককে জানান, সড়কের শিবগঞ্জ থেকে বিএন উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত চার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে সংস্কার কাজের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এছাড়াও চলমান সংস্কার কাজের ঠিকাদার কাজ ফেলে রাখায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।



