সিলেটের দাবি-দাওয়া নিয়ে কি কঠিন আন্দোলনের দিকে যাচ্ছেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক?
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ৫:২১:১৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেটের স্থানীয় দাবি-দাওয়া নিয়ে কি কঠিন আন্দোলনের দিকে যাচ্ছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী? আরিফুল হক ১৫ দিনের মধ্যে সিলেটের সড়ক, রেল ও আকাশপথের যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিবদমান সমস্যাবলী সমাধানের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে রোববার এক ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচি পালনশেষে এ আল্টিমেটাম দিয়ে সাবেক মেয়র বলেন, এই ১৫ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যমন্ডলী একবার সড়কপথে সিলেটে এলে অধিকাংশ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তা না হলে এ নিয়ে তারা যে আন্দোলন শুরু করবেন; এর দায়ভার সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে নিতে হবে।
আরিফুল হকের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, সিলেট-ঢাকা, সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেনের নতুন বগি চালু, রেল টিকেটের কালোবাজারি বন্ধ করা, সিলেট-ঢাকা রুটের বিমান ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা ও সিলেটের অভ্যন্তরী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়ন ও টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ।
আরিফুল হক রোববার কোর্ট পয়েন্টে যে সমাবেশের ডাক দেন, তাতে ব্যবসায়ীরা দোকান-পাট বন্ধ করে অংশ নেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর অধিকাংশ দোকান-পাট বন্ধ। পাশাপাশি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মণিপুরি সম্প্রদায়ের লোকজন, শ্রমিক সংগঠন, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা ব্যানার সহকারে যোগ দেন। সমাবেশের সভাপতির ক্ষেত্রেও ছিল ভিন্নতা। দরগাহে হযরত শাহজালাল(র.) মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা আসজাদ আহমদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভামঞ্চের অগ্রভাগে ছিলেন-বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতারা।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারী একজন সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় দাবি-দাওয়ার মাধ্যমে আরিফুল হক মূলত নিজের অবস্থানেরই জানান দিলেন।
সমাবেশশেষে নেতা-কর্মীদের নিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথেও সংক্ষিপ্ত বৈঠকে মিলিত হন আরিফ। জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স হলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ক্ষমতাগ্রহণের এক বছর অতিবাহিত হলেও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস এক ঘণ্টার জন্যও সিলেটে আসেননি। অথচ প্রত্যেক সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান হযরত শাহজালাল(র.) ও শাহপরান(র.) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু, এবারের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে কেবল ব্যতিক্রমী চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে প্রধান উপদেষ্টাকে সিলেট সফরে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সিলেটের ন্যায্য দাবি-দাওয়া সরকারের নজরে আনতে তিনি জেলা প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, সিলেটের মানুষের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে তিনি একমত। উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়িত না হওয়ায় সারাদেশের সাথে সিলেটের যোগাযোগের ক্ষেত্রে দৈন্যদশার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এ বিষয়গুলো সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নজরে আনবেন। পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি সচল না হওয়া পর্যন্ত সিলেট-ঢাকা রুটে একটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায় কিনা-সে চেষ্টাও চালাচ্ছেন। সিলেট-ঢাকা ছাড়া দেশের অন্য কোন অভ্যন্তরী রুটে বিমানের ভাড়া বাড়ে না-এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিমান ভাড়া নিয়ে তিনি শিগগিরই বিমান অপারেটরদের সাথে বৈঠকে বসবেন।
আরিফুল হক চৌধুরী দুই মেয়াদে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলেন। এছাড়া, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, মহানগর বিএনপির সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।



