সুনামগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ জনজীবন, ১৮ ঘণ্টাই লোডশেডিং
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৫:০৭:৫১ অপরাহ্ন
শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। জেলার প্রায় ১২ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় দিন-রাত বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলা চলছে। প্রতিদিন গড়ে ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং এর কবলে পড়ছেন সমিতির গ্রাহকরা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে রেখে বিপাকে পড়েছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। রাতের প্রথম ভাগের বেশির ভাগ সময় লোডশেডিংয়ের কবলে থাকার কারণে বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। দিনের বেলায় প্রচন্ড গরমে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কষ্ট করছেন পরিবারের বয়স্ক ও নারী সদস্যরা। আর্থিক ক্ষতির মুখে রয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। লোডশেডিংয়ে কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায় বিপাকে পড়েছেন গ্রামীণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, খামারি, স্টুডিও স্টেশনারি, রেস্টুরেন্ট, লাইব্রেরিসহ চালেরকলের ব্যবসায়ীরা। শাল্লা উপজেলার আটগাঁওয়ের সুজন মাহমুদ বলেন, আমাদের এখানে বিদ্যুৎ গেলে আর আসেনা। রাতে দুয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাই। দিনের বেলাও একই অবস্থা।
দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘কারেন্ট আয় না যায় ইতা বুঝা যায় না। কতটা দিন ধরে কারেন্টে খুব সমস্যা করের’।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁও গ্রামের মোফাসেল আহমদ বলেন, সামনে বার্ষিক পরীক্ষা। রাতের বেলা ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করতে পারে না। সন্ধ্যা হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। দিনের অবস্থা একই। গরমে কষ্ট করতে হয় আমাদের।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ হিসেবে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না পাওয়াকে দায়ি করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা।
সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, জেলায় সমিতির আওতায় ১২ উপজেলায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। বৃহৎ সংখ্যক গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা ৭০-৭৫ মেগাওয়াট। কিন্তু জাতীয়ভাবে বিদ্যুতের উৎপাদন কম থাকায় প্রতিদিন গড়ে ৩৫-৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে সুনামগঞ্জের জন্য। ফলে ৫০-৬০% লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো. জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ সমস্যা এটি জাতীয় ব্যাপার। জাতীয়ভাবে উৎপাদন কম হওয়ায় আমরা সরবরাহ কম পাচ্ছি । তাই, বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তবে রাতের বেলায় বেশি চাহিদা থাকায় বিপাকে পড়তে হয় আমাদের। আমরা চেষ্টা করছি ঘাটতির মধ্যেও সেবা দেয়ার। জাতীয়ভাবে উৎপাদন বাড়লে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।




