ভারতীয় লোকজনের বাধা ও ওজন সমস্যা
সুতারকান্দি ও জকিগঞ্জসহ তিন স্টেশন দিয়ে সবধরনের বাণিজ্য বন্ধ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:১৪:৪১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: ভারতীয় লোকজনের বাধায় সুতারকান্দি ও জকিগঞ্জ স্টেশন দিয়ে সবধরনের বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে, পণ্য পরিমাপ নিয়ে জটিলতায় সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি বন্ধ রয়েছে।
এতে সীমান্তের উভয়পাড়ে আটকা পড়েছে শত কোটি টাকা মূল্যের পণ্যবোঝাই ছয় শতাধিক ট্রাক। লোকসান গুণতে হচ্ছে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের।
গত সোমবার ভারতের করিমগঞ্জ জেলার সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশনে মিছিল নিয়ে জড়ো হন কয়েকশ’ ভারতীয় লোক।
‘হিন্দু ঐক্যমঞ্চ’র ব্যানারে মিছিলকারী লোকজন একপর্যায়ে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশের প্রস্তুতি নিলে বিএসএফ ও পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়।
এ সংক্রান্ত ভিডিও রোববার ফেসবুকে ভাইরালও হয়। এসময় ভারতীয় বিক্ষোভকারীরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যায়।
একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ভারতের করিমগঞ্জ শুল্ক স্টেশনে। পরে ওই স্টেশন দিয়েও আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়।
জকিগঞ্জ স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, মঙ্গলবার কোন পণ্য আসেনি ও বুধবারও কোন পণ্য এই স্টেশন দিয়ে আসবেনা।
তিনি জানান, এই স্টেশন দিয়ে মূলত মাঝে মাঝে কিছু পণ্য আসে। খুব একটা ব্যস্ত স্টেশন নয় এটি।
এদিকে, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক পরিচালক এবং পাথর আমদানিকারক গ্রæপের সভাপতি আতিক হোসেন জানান, ইসকন ইস্যুতে ভারতের সুতারকান্দি ও করিমগঞ্জ বর্ডার দিয়ে সবধরনের আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে।
ভারতীয় লোকজনের বাধার মুখে ভারত থেকে বাংলাদেশে কিংবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে কোন পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে পারছে না।
তিনি জানান, সোমবার পর্যন্ত ভারতের সুতারকান্দিতে পাথরসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী অন্তত ২০০ ট্রাক এবং এপারে শেওলা শুল্ক স্টেশনে অর্ধশতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে।
এছাড়া, সিলেটের জকিগঞ্জের ওপারে ভারতের করিমগঞ্জে আটকা পড়েছে ফল ও কাঁচামাল বোঝাই অর্ধশতাধিক ট্রাক।
আতিক হোসেন আরও জানান, সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে পণ্য পরিমাপ নিয়ে অসন্তোষের জের ধরে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, সিলেটের তামাবিল ও শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে যে পাথর আমদানি করা হয়, তা সরাসরি খনি থেকে ট্রাকে লোড করা হয়। ফলে পাথরের সাথে মাটি ও বালি মিশ্রিত থাকে।
আগে শুল্কায়নের পূর্বে বন্দর কর্তৃপক্ষ মাটি ও বালির ওজন বাদ দিয়ে পাথরের ওজন নির্ণয় করতেন। কিন্তু বর্তমানে স্থলবন্দরের নতুন কর্মকর্তারা মাটি ও বালির ওজন ছাড় না দেওয়ায় লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন।
এতে তামাবিল স্থলবন্দরের ওপারে ভারতের ডাউকিতে পাথর ও চুনাপাথর বোঝাই তিন শতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে।
এব্যাপারে তামাবিল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সর্বশেষ পাথর ও চুনাপাথর বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করেছিল ১৬ নভেম্বর।
ব্যবসায়ীরা আমদানি করছেন না তাদের লোকসান হয় দেখে। তবে ইসকন ইস্যুতে এই বন্দরে কোন প্রভাব পড়েনি বলে জানান তিনি।