আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য সহজ নয়, জনগণ ম্যাটারস : তারেক রহমান
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৪:০৬ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক : ‘আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য সহজ নয়, জনগণ ম্যাটারস’, এ কথা স্মরণ করিয়ে দলের সব স্তরের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমি গত কয়েক মাস ধরে বলছি, সামনের নির্বাচন এত সহজ নয় আপনারা যত সহজ ভাবছেন। যতই বড়াই করুন যে বিএনপির শাখা-প্রশাখা একদম গ্রাম পর্যন্ত আছে…অন্যদের কি আছে? তাই তো বড়াই করছেন। থাকতে পারে শাখা-প্রশাখা, কিন্তু তারপরও জনগণ ম্যাটারস।’
‘জনগণ হচ্ছে আমাদের শক্তি, জনগণ হচ্ছে আমাদের সমর্থন। জনগণ ৫ আগস্ট বুঝিয়ে দিয়েছে। কাজেই আমরা যদি ভুল করি জনগণ আবার কোনো একটা কিছু বুঝিয়ে দেবে…তখন কিন্তু পস্তাতে হবে,’ বলেন তিনি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক বলেন, ‘এখনো সময় আছে আমরা জনগণের পাশে থাকি, জনগণের সাথে থাকি। যারা এমন কিছু করবে যা আপনাকে-আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, বা দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলব।’
বাবা জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘যদি শহীদ জিয়াকে সত্যিকারভাবে আমাদের স্মরণ করতে হয়, যদি শহীদ জিয়াকে সত্যিকারভাবে সম্মান জানাতে হয়… দেশনেত্রী সবচাইতে খুশি হবেন যখন দেখবেন জনগণ সমর্থন দিয়েছে বিএনপির প্রতি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কে ছোট নেতা, কে গ্রামের নেতা, কে ইউনিয়নের নেতা, কে বড় নেতা, কে বিভাগীয় নেতা, কে কেন্দ্রীয় নেতা বিষয়টা এটি নয়। বিষয়টি হচ্ছে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে।’
‘আমাদের এমনভাবে দাঁড়াতে হবে যেন জনগণ বোঝে যে আমরা তাদের সঙ্গে আছি। জনগণ যেন বোঝে যে তারা যেভাবে চায় আমরা সেভাবেই আছি…জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা সেইভাবেই তাদের পাশে আছি। আজ রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকীতে এই হোক আমাদের শপথ।’
তারেক রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্রের, সরকারের প্রতিটি পর্যায়ে, সেটি জাতীয় সংসদ হোক, সেটি পৌরসভা হোক, সেটি ইউনিয়ন পরিষদ হোক যেটিই হোক না কেন, সমাজের সব স্তরে যদি আমরা জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারি, তাহলে ধীরে ধীরে আমরা এগোতে সক্ষম হব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে প্রতিটি কাজের জন্য, তাহলেই জনগণের ক্ষোভ, দুর্দশা লাঘব করা সম্ভব হবে। জনগণের কথা, জনগণের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে সরকারের কাজের মাধ্যমে।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের ১৭ বছরের নির্যাতন-নিপীড়ন-মামলা-কারাভোগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা একটা গড় হিসাব জানি, বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে বিভিন্ন মিথ্যা-গায়েবি মামলা আছে। শুধু জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে বিএনপির প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, হাজার নেতাকর্মী বিভিন্নভাবে জখম হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ হিসেবে হয়ত আমরা বিভ্রান্ত হতেই পারি কিন্তু যে পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে এই মুহূর্তে আজ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি, আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো দয়া করে ওই মোটরসাইকেলওয়ালাদেরকে ভিড় করতে দেবে না। দয়া করে আপনারা বিভ্রান্তিকর কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘নিজেকে যত বড় মনে করি না কেন, জনগণ যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং নাম বলব না কিছু রাজনৈতিক শক্তি—যেই হোক না কেন, ছোট-বড় হোক না কেন, তারা বিভিন্নভাবে আমাদের বিপক্ষে এই মোটরসাইকেলওয়ালাদের কিছু কাজকর্মের কারণে আমাদের নেতাকর্মীদের যুক্ত করে কিছু কিছু কথা বলার চেষ্টা করছে। আমাদের এ ব্যাপারে সর্তক ও শক্ত হতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সঞ্চালনা করেন।