সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ ৯ জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ৪:৪৭:২২ অপরাহ্ন

ডাক ডেস্ক : সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একজন ও মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একজনসহ সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে গতকাল সোমবার ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য স্থানের মধ্যে কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় ৪ জন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে ৩ জন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও মদনে ২ জন, চাঁদপুরের কচুয়ায় একজন, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে একজন মারা গেছেন।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে গতকাল সোমবার সকালে বজ্রপাতে রিমন তালুকদার নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রিমন আটগাঁও গ্রামের বাসিন্দা এবং শাল্লা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে গ্রামের পাশের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান রিমন তালুকদার। একপর্যায়ে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। রিমন তালুকদার নিরাপদ স্থানে যাওয়ার আগে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার হাওরে বজ্রপাতে দুর্বাসা দাস (৩৫) নামে এক ধান কাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার আড়িয়ামুগুর গ্রামের কালাবাসী দাসের ছেলে। এ ছাড়াও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৩ জন। গতকাল সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বানিয়াচং থানার (ওসি) গোলাম মোস্তফা।
জানা যায়, সকাল থেকেই উপজেলার আড়িয়ামুগুর গ্রামের পূবের হাওরে ধান কাটছিলেন দুর্বাসা দাসসহ তার স্বজনরা। এসময় ঝড়ো বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হলে দুর্বাসা দাস বজ্রাঘাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এছাড়াও আহত হন তার ভাই ভূষণ দাস (৩৪) ও বোন সুধন্য দাস (২৮)।
এদিকে একই উপজেলার বাগহাতা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে বায়েজিদ মিয়া (১৩) নামে এক শিশু বজ্রাঘাতে আহত হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হবিগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান বলেন, বজ্রাঘাতে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।
মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মাখন রবি দাস (৪৮) নামে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মাখন ওই ইউনিয়নের অহিদাবাদ চা বাগানের মৃত শংকুরা রবি দাসের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সোমবার মাখন রবি দাস শ্রীধরপুর গ্রামের আলমাছ মিয়ার জমির ধান চুক্তিতে কেটে দিচ্ছিলেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলে মাখন মারা যান।
উত্তর শাহবাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ বজ্রপাতে চা শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। পুলিশও এসেছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফনের জন্য নিহতের স্বজনরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করবেন।
তাছাড়া চাঁদপুরের কচুয়ায় বিশাখা রানী (৩৫) নামের এক গৃহবধূ, কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগরে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে হাওরে ধান কাটার সময় ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৫) নামে দুই কৃষক, একই সময়ে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে ফুলেছা বেগম (৬৫) নামে এক নারী, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ধনুন্দ গ্রামে দিদারুল ইসলাম (২৮) নামের মাদ্রাসা শিক্ষক ও উপজেলার তিয়োশ্রী গ্রামে মো. আরাফাত (১০) নামে মাদ্রাসা ছাত্র, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় শেফালী বেগম (৩৫) নামে এক নারী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে জমিতে কাজ করার সময় মানিক মিয়া (৬৫) নামে এক কৃষক নিহত হন। তার সঙ্গে থাকা হানিফ মিয়া (৬০) গুরুতর আহত হয়েছেন।