জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতি’র অ্যাডহক কমিটি গঠন
সিলেটের ডিসিকে আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫:১৯:৩৫ অপরাহ্ন

ডাক ডেস্ক : সিলেটের জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির অ্যাডহক কমিটি গঠন ও হিসাব পরিচালনার বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন আদালত। নোটিশে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে বিচারক এই আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য গতকাল সোমবার সিলেটের ডাককে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, নিয়ম বহির্ভূতভাবে জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির অ্যাডহক কমিটি গঠন ও হিসাব পরিচালনার অভিযোগে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। সিলেটের জেলা প্রশাসক জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির পদাধিকার বলে সভাপতি।
মামলায় সমিতির সভাপতি ও সিলেটের জেলা প্রশাসক নির্দিষ্ট দায়িত্ব বহির্ভূত কোনো কার্যক্রম দ্বারা সমিতি পরিচালনা, তহবিল বা স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিষয়ে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে না পারেন, সে ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করা হয়। আদালত সেটি আমলে নিয়ে ১নং বিবাদীকে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।
মামলার সিলেটের জেলা প্রশাসক ও জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সমিতির সহ-সভাপতি মো. আনোয়ারুজ্জামান, বিভাগীয় কমিশনার, রূপালী ব্যাংকের ইসলামপুর করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক, সিলেটের সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, সিলেট বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক, সুবিদবাজার এলাকার মৃত গোলাম রাব্বানী চৌধুরীর ছেলে মাহবুব ছোবহান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট কাওছার আহমদ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও সহকারী কমিশনারকেও বিবাদী করা হয়েছে।
আদালতে দাখিল করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১৯৬৪ সালে গঠিত জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। মামলার ১নং বিবাদী পদাধিকার বলে সমিতির সভাপতি। গঠনতন্ত্রের ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সভাপতির নির্দিষ্ট দায়িত্ব কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
মামলায় বাদীপক্ষ অভিযোগ করেন, সমিতির বর্তমান কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন কার্যকরী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর সমিতির সম্মেলনকক্ষে সাধারণ সভা আহ্বান করেন। কিন্তু সভায় কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয়নি। তাই বিধি মোতাবেক সভা মূলতবি করা হয়।
কিন্তু ২নং বিবাদী সমিতির সহ-সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ারুজ্জামান জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও মামলার বিবাদী কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে সদস্য করে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে মর্মে প্রচার করেন। ১নং বিবাদী সমিতির প্যাডে সীলবিহীন একটি পত্রের মাধ্যমে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অপারেশনের জন্য ভর্তি রোগীদের ডায়েট বিল বাবদ বিভিন্ন অঙ্কের তিনটি চেক স্বাক্ষরযুক্ত মতে প্রেরণ করে নির্দেশিত মতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৩ (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সভাপতি হিসেবে কোনো চেক স্বাক্ষর কিংবা অর্থ উত্তোলন করার বিধান নাই। ১নং বিবাদির উদ্দেশ্যমূলক, আইন ও এখতিয়ার বহির্ভূত কার্যক্রমের ফলে সমিতির তহবিল, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং জনহিতকর কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হওয়ার উপক্রম। ১নং বিবাদি জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও সিলেটের জেলা প্রশাসক নির্দিষ্ট দায়িত্ব বহির্ভূত কোনো কার্যক্রম দ্বারা সমিতি পরিচালনা, তহবিল বা স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিষয়ে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে না পারেন-সে ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করলে আদালত তা আমলে নিয়ে ১নং বিবাদিকে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন।