করোনা সংক্রমণ : ওসমানী বিমানবন্দর ও তামাবিল স্থলবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বিকল
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুন ২০২৫, ১১:১২:২৩ অপরাহ্ন

আনাস হাবিব কলিন্স :
করোনা ঠেকাতে সিলেটের স্বাস্থ্যবিভাগ নানা উদ্যোগ নিলেও বিকল হয়ে রয়েছে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত থার্মাল স্ক্যানার। তামাবিল স্থলবন্দরের চিত্রও একই। ফলে, ওই দুই জায়গায় যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপতে হচ্ছে বিকল্প পদ্ধতি ইনফারেড থার্মোমিটার দিয়ে।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মো. নাসির উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ ওই দুটি বন্দরে দ্রুত থার্মাল স্ক্যানার বসানো হবে। করোনা নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে তার মন্তব্য। তবে সতর্কতা জরুরি বলে জানান তিনি।
সিলেটের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, করোনা সংক্রমণ পরবর্তী সময়ে ব্যবহার না হওয়ায় ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্মাল স্ক্যানার বিকল হয়ে পড়েছে। তামাবিল স্থলবন্দরেও একই অবস্থা হয়েছে।
তবে, ইনফারেড থার্মোমিটার দিয়ে ওই দু’জায়গায় কাজ চলছে। তিনি আরো বলেন, থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপা সহজ ও নিরাপদ। স্ক্যানার মেশিন দুটি দ্রুত সচল না হলে নতুন করে স্ক্যানার বসানো হবে বলেও জানান তিনি। প্রবাসী অধ্যুষিত ওই অঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি ও সচেতনতার বিকল্প নেই। এ জন্য তিনি বেশি লোকসমাগম স্থান এড়িয়ে চলা ও মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ জানিয়েছেন, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করায় তারাও বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের জন্য ইমিগ্রেশন এলাকায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তাছাড়া, বিমানবন্দরের যাত্রী ও কর্মীদের জন্য মাস্ক ব্যবহারসহ সচেতনতা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে, ভারত থেকে সিলেটে সরাসরি কোন ফ্লাইট না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি।
তামাবিল ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ শামীম আহমদ জানান, ভারত থেকে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে তারাও প্রস্তÍুত রয়েছেন। এ জন্য জেলা সিভিল সার্জনের একটি টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
ভারতসহ বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ধরনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশেও সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগও নড়েচড়ে বসেছে। করণীয় নিয়ে সম্প্রতি এক জুম মিটিং করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই মিটিং থেকে সিলেটে করোনার পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন থাকলেও র্যাপিড এন্টিজেন্ট কীট সংকটের বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।
সিলেট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বর্তমানে বন্ধ থাকলেও বিষয়টি নিয়ে তারাও উদ্বিগ্ন। তবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫টি নির্দেশনা কঠোরভাবে পালন করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিয়মিতভাবে সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, জনসমাগমস্থলে এবং ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার করা, আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করা এবং হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কনুই দিয়ে মুখ ও নাক ঢেকে রাখা। এসব নির্দেশনা পালন করতে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অবগত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। সারাদেশে নতুন করে বাড়ছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারতসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি জোরদার করতে বলা হয়েছে।