জগন্নাথপুরে ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি, থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, জামায়াত নেতা বহিষ্কার

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : জগন্নাথপুর উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির দুই নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী ঝলক ফ্যাশনের মালিক শ্যামল গোপ ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অপরদিকে, এ ঘটনাকে মিথ্যা বানোয়াট উল্লেখ করে শ্যামল গোপের বিরুদ্ধে গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে এবং তিনি আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা এমন অভিযোগ এনে থানায় পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের নেতা লিটন মিয়া। এদিকে, গতকাল শনিবার উপজেলা জামায়াতে ইসলামির আমীর মো: লুৎফুর রহমান ও সেক্রেটারি মাওলানা আফজাল হোসাইন যৌথ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠান। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি চিলাউড়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম রিপন দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের আনুগত্য, দৃষ্টিভঙ্গি ও শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে জড়িত থাকায় দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হলো। এর আগে গত ২৭ মে দলের কর্মপরিষদের সভায় সর্বসম্মত মোতাবেক তাকে দলের সকল পদ পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ব্যবসায়ী শ্যামল গোপ গতকাল শনিবার স্থানীয় সাংবাদিকদের ডেকে সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত বক্তব্যে জানান, জগন্নাথপুর পৌর জমিয়তের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লিটন মিয়া ও তার শ্যালক চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন জামায়াতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিপন প্রায় সময় আমাকে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখাতেন। আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় এক পর্যায়ে তাদেরকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছি। পরবর্তীতে গত ৩ জুন তারা আমার কাছে আরও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন কিন্তু আমি টাকা দিইনি। বর্তমানে আমি তাদের হুমকি ধামকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাধ্য হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।

অভিযুক্ত লিটন মিয়া মুঠোফোনে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। যার কোন প্রমাণ সে দেখাতে পারবে না। সে আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা এবং ব্যবসার আড়ালে সে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে।

অপরদিকে, রেজাউল করিম রিপন জানান, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। দল থেকে বহিষ্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর দলের সাথে কাজ করেছি। বহিষ্কার বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিজের ফেসবুক আইডিতে লিখেন আজ দীর্ঘ ২০ বছরের এক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হলো। সুযোগ সন্ধানী ষড়যন্ত্রকারী ক্ষমতালোভী নেতৃবৃন্দ পথের কাঁটা সরিয়ে ফেলানোর কাজে সফল হওয়ায় আপনাদেরকে ধন্যবাদ।

জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোঃ লুৎফুর রহমান বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দলীয়ভাবে সতর্ক করার পরও সংশোধনের চেষ্টা না করে সাংগঠনিক আনুগত্য ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে বিরত না থাকায় তাকে বহিষ্কার করা হয়।

জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্কতা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঞা বলেন, উভয়পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।