২টি ১০ তলা হল নির্মাণের প্ল্যান হলেও কাজ শুরুর কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা
৮৫ বছরের জীর্ণ ওসমানীর ডা. সামসুদ্দিন ছাত্রাবাস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ আগস্ট ২০২৫, ১:৫২:০৭ অপরাহ্ন

ডা: এস.এম. আসাদুজ্জামান জুয়েল : সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ সিলেট বিভাগের জনগুরুত্বপূর্ণ একটি স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশের ৮টি পুরাতন মেডিকেল কলেজের মধ্যে অন্যতম স্বনামখ্যাত এই মেডিকেল কলেজ। ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত মেডিকেল স্কুলটি কালের পরম্পরায় ১৯৬২ সালে হয় সিলেট মেডিকেল কলেজ এবং ১৯৮৬ সালে হয় সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ। মেডিকেল কলেজের পুরাতন ও নতুন ক্যাম্পাস নামে দু’টি এলাকাতেই শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের আবাসস্থল। আবাসস্থলের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোয়ার্টার আর ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসস্থল হোস্টেল বা ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস নামে পরিচিত।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ওসমানী মেডিকেলের পুরাতন ক্যাম্পাস অতিপুরাতন অর্থাৎ ১৯৪০ সালে তথা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। জার্মান সৈন্যদের ব্যারাক হিসেবে গড়ে উঠা স্থাপনাটিই শহীদ ডা: সামসুদ্দিন আহমেদ ছাত্রাবাস নামে ৮৫ বছরের জীর্ণ-শীর্ণ দেহে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যার ছাদ বার বার ধ্বসে পড়ছে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়তে পড়তে অনেক জায়গায় বড় বড় গর্তের ক্ষত চিহ্ন তৈরী হয়েছে। এসব কক্ষে থেকে মানবিক চিকিৎসক হতে এসে ছাদ ধসে পড়ে জীবনহানি ঘটে কিনা এ নিয়ে সব সময়ই চিন্তিত থাকেন এই ছাত্রাবাসের (শহীদ ডা: সামসুদ্দিন আহমদ ছাত্রাবাসের) শিক্ষার্থীবৃন্দ। গত ১৩ আগস্টও ছাত্রাবাসটির ছাদ ধসে পড়ে। ভাগ্য ভালো, ধসে পড়া ছাদটির নীচে সেদিন কোনো ছাত্র ছিল না। নতুবা হতে পারতো বড় ধরনের প্রাণহানির মত ঘটনা।
অপরদিকে, ওসমানী মেডিকেল কলেজের নতুন-পুরাতন ক্যাম্পাস মিলে মেয়েদের ৪টি এবং ছেলেদের ৪টি ছাত্রাবাস রয়েছে। প্রতিটি ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাসের অবস্থাই জরাজীর্ণ দশায় পতিত। সংস্কার যেমন আশু প্রয়োজন, তেমনি নতুন ছাত্রাবাস/ ছাত্রীনিবাস নির্মাণেরও দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে এ প্রতিবেদক ওসমানী মেডিকেলের প্রাক্তণ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা: শিশির রঞ্জন চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার দায়িত্বকালীন সময় ২০২৩ সালের শেষের দিকে সারাদেশে মোট ১৯টি ছাত্রাবাস/ ছাত্রীনিবাস তৈরির প্রস্তাবনা ছিল এবং তা একনেকে পাশও হয়। যার মধ্যে নতুন ক্যাম্পাসে মেয়েদের একটি ছাত্রীনিবাস এবং পুরাতন ক্যাম্পাসে শহীদ ডা: সামসুদ্দিন আহমদ ছাত্রাবাস ভেঙে সেখানে ১০ তলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস নির্মাণের প্ল্যান পাশ হলেও অদ্যাবধি তা আলোর মুখ দেখেনি।
বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা: মো: জিয়াউর রহমান চৌধুরী আরো আশা প্রকাশ করেন, পুরাতন হোস্টেলগুলোর সংস্কারসহ ওসমানী মেডিকেলের বহুতল ভবন নির্মাণের যে পরিকল্পনা ছিল সেটি যেন বর্তমান সদাশয় অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাস্তবায়ন হয়।