সিলেটের ডাকে সংবাদ প্রকাশের পর
জকিগঞ্জে প্রভাবশালীদের দেয়াল ভাঙল প্রশাসন, অবশেষে মুক্ত অসহায় পরিবার
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:২১:১০ অপরাহ্ন

জকিগঞ্জ (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : ছয় মাসের দীর্ঘ অবরুদ্ধ জীবন শেষে অবশেষে মুক্তি পেল জকিগঞ্জ পৌর এলাকার বিলেরবন্দ গ্রামের অসহায় জেসমিন আক্তারের পরিবার। আজ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সারওয়ার আলমের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন প্রভাবশালীদের নির্মিত অমানবিক দেয়াল ভেঙে অবরুদ্ধ জেসমিনের পরিবারকে মুক্ত করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় বিশ্বাস এবং জকিগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম মুন্নার উপস্থিতিতে দেয়াল ভাঙার কাজ সম্পন্ন হয়।
গত ছয় মাস ধরে স্কুল পড়ুয়া চার সন্তান, বৃদ্ধা শাশুড়ি ও মানসিক ভারসাম্যহীন স্বামীকে নিয়ে জেসমিন পাঁচফুট উঁচু দেয়ালের ভেতরে বন্দি ছিলেন। আজিজিয়া কমিউনিটি সেন্টারের মালিক এমাদ উদ্দিন ও তার ভাই এনাম আহমদ শতবর্ষী চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়াল নির্মাণ করেছিল।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার ও এর আগে দৈনিক সিলেটের ডাকে জকিগঞ্জের এই অসহায় পরিবার নিয়ে সচিত্র দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সামাজিক ও জাতীয় পর্যায়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। শেষ পর্যন্ত জেসমিন সরাসরি ডিসির শরণাপন্ন হলে প্রশাসন তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়।
মুক্তির পর জেসমিন বলেন, “আমার সন্তানরা অবশেষে মুক্ত হলো। আমি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে কৃতজ্ঞ। এখন আমার সন্তানরা আবার স্কুলে ফিরতে পারবে।”
উল্লেখ্য, গত প্রায় ৬ মাস ধরে পাশের বাড়ির আব্দুল আজিজ আজই মিয়ার ছেলে প্রভাবশালী এমাদ উদ্দিন ও তার ভাই এনাম আহমদের নির্মিত দেয়ালে জিম্মি দশায় ছিলেন জকিগঞ্জ পৌর এলাকার বিলেরবন্দ গ্রামের অসহায় জেসমিন আক্তার। এ ঘটনায় জকিগঞ্জ প্রেসক্লাবের পক্ষে সাংবাদিক কেএম মামুন গত জুন মাসে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন। অসহায় জেসমিন আক্তার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় ওঠে। গত মঙ্গলবার অসহায় পরিবারটির কর্তা জেসমিন আক্তার ও তার স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন লিটন আহমদ সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সারওয়ার আলমের শরণাপন্ন হন। এরপর ডিসি তাৎক্ষণিক দেয়াল ভেঙে অসহায় পরিবারকে মুক্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং পৌর প্রশাসক প্রণয় বিশ্বাস, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না অবরুদ্ধ জেসমিনের পরিবারকে দেয়াল ভেঙে মুক্ত করেন।