জায়গা-ঘাট দখল : এনসিপি নেতা ও ব্যবসায়ীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:১৯:২৭ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার চকবাজারের একটি দোকান দখল নিয়ে এনসিপি নেতা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ অন্যের দোকানের জমি দখল করে পাকা দেয়াল তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দা এনসিপি সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির প্রথম যুগ্ম সমন্বয়কারী আতাউর রহমান। শুধু জমি দখল নয়, তাঁর বিরুদ্ধে বাজারের নৌকাঘাট দখল ও নৌকা চালানোর বিনিময়ে দৈনিক ভিত্তিতে এক ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার লিখিত অভিযোগও পাওয়া গেছে। তবে এনসিপি নেতার দাবী, নিজের ক্রয়কৃত জমিতে মানবিক কারণে দুজনকে থাকতে দেয়ার পর পাকা ঘর বানাতে গেলে আ.লীগ নেতাদের সাথে নিয়ে বাঁধা দিচ্ছে তার বিরোধীরা। নৌকাঘাট পাইয়ে দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ আহমেদ তারেক ইউএনওর কাছে তদবির করার জন্য অনুরোধ জানলে তা প্রত্যাখান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেছে বলে জানান তিনি।
দখলের প্রতিবাদে ওই এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মানববন্ধন করেন ব্যবসায়ীরা। মানববন্ধনে চকবাজার এলাকার বাসিন্দা জুয়েল আহমদ অভিযোগ করে বলেন, চকবাজারে ‘জুয়েল ভেরাটিজ স্টোর’ নামে তাঁর একটি দোকান আছে। পাশেই তাঁর চাচার আরেকটি দোকান। এই দুই দোকানের পেছনে তাঁদের কিছু খালি জায়গা আছে। ওই খালি জায়গার পেছনে বিরোধপূর্ণ কিছু জমি কিনেছেন বলে সম্প্রতি বাজারে প্রচার করেন এনসিপি নেতা আতাউর রহমান। জমিটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি।
অন্যদিকে এনসিপি জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারীর কাছে আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে বাজারের নৌকাঘাট দখল ও চাঁদাবাজির লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দোয়ারাবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের আহবায়ক ফরিদ আহমেদ তারেক।
তবে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবী করে আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের একটি রেষ্টুরেন্টের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আতাউর রহমান, সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রকৃত হচ্ছে, চকবাজারের কিছু জায়গা আমার ক্রয়কৃত। মানবিক কারণে দু জনকে থাকতে দিয়েছি। এরপর তারা দুজন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়ায়। কয়েকমাস আগে আমি আমার জায়গায় পাকা ঘর করতে গেলে দুজনকে জায়গা ছাড়তে বলি। এতে এক পক্ষ চলে গেলেও আরেকজন যেতে আপত্তি জানায়। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ফরিদ আহমেদের যোগসাজশে তার ভাই কালাম ও ভাতিজা জুয়েলকে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে অভিযোগ জানায়। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আমার কাছে বাজারের নৌকাঘাট ইজারা নেয়ার জন্য ইউএনওর কাছে তদবিরের সুপারিশ করার অনুরোধ জানায়। আমি প্রত্যাখান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব করছে। নৌকা ঘাটের বিষয়ে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নাই। আমার জায়গা যেগুলো তারা দখলে আছে তা যেন ছাড়তে না হয় সেজন্য তারা এই অভিযোগ ও ষড়যন্ত্র করছে।
এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুপ রতন সিংহ বলেন, আওয়ামী লীগ কিংবা এনসিপি নেতা যারা চকবাজারের অস্থায়ী খেয়াঘাট নিয়ে নানান কথা বলছেন তারা কেউই খেয়াঘাটের দায়িত্বশীল কেউ নন। দায়িত্বশীল স্থানীয় মসজিদ মাদ্রাসা সহ ৭টি প্রতিষ্ঠান যারা খেয়াঘাট পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। বিষয়টি তারা ভালো জানবেন। আমার কাছে এখন পর্যন্ত খেয়াঘাট নিয়ে বা সাবলিজ নিয়ে কেউ কোন অভিযোগ জানায়নি।