স্কলার্সহোমে ভাইস প্রিন্সিপালের পদত্যাগসহ ৫ দাবী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭:১৯:৫৭ অপরাহ্ন

অনলাইন ডেস্ক : সিলেটের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কলার্সহোম’র শিক্ষার্থী আজমান আহমেদ দানিয়ালের (১৯) অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল ক্যাম্পাস। রোববার কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আশরাফ হোসেন চৌধুরীর পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি ও সংস্কারের ৫ দাবিতে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই দাবী মেনে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন শিক্ষাথীরা।
তাদের ৫ দফা দাবী হলো- অনতিবিলম্বে ভাইস প্রিন্সিপাল আশরাফ হোসেন চৌধুরীর পদত্যাগ করতে হবে; শ্রেণিশিক্ষক শামীম হোসেন ও সিনিয়র শিক্ষক তাইবাকে অপসারণ করতে হবে; পরবর্তীতে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে কোনো শিক্ষার্থীকে কোনো সমস্যার সম্মুখীন কিংবা হেনস্তা করা যাবে না; আজমানের আকস্মিক মৃত্যুতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার কারণে পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতিসাধন হওয়ায় টেস্ট পরীক্ষায় প্রভাব পড়বে। বিধায় এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের যেন কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি দাঁড় করানো না হয়; কলেজের নোটিশ বোর্ডে টানানো আজমানের ব্যাপারে সংবাদ বিবৃতি সরাতে হবে।
আরও পড়ুন : ‘শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ এড়াতে’ আজ স্কলার্সহোম বন্ধ ঘোষণা
এসময় সংস্কারের জন্য আরও ৫ দাবী উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। তা হলো- ভবিষ্যতে কোনো অভিভাবকের সাথে অসদাচরণ যাতে করা না হয়; আগামীতে কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যবহার এবং নীতি যেন শিক্ষার্থীবান্ধব হয়; পরীক্ষা কমিটি রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মতামতের গুরুত্ব দেওয়া; রুটিনের ক্ষেত্রে ১৩ কার্যদিবসের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনে অন্তত ২৬ কার্যদিবস করতে হবে; শিক্ষার্থীরা কোনো অভিযোগ দেওয়ার কারণে প্রায়শই শিক্ষকরা ব্যক্তিগত আক্রোশের প্রতিফলন ঘটান একাডেমিক কার্যক্রমে, যা বন্ধ করতে হবে; ক্লাস ক্যাপ্টেন কিংবা প্রতিনিধি নির্ধারণের ক্ষেত্রে নির্বাচনী পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
আরও পড়ুন : স্কলার্সহোমের শিক্ষার্থী দানিয়ালের মৃত্যুর দায় কার?
এর আগে এইচএসসির প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় ৫ সাবজেক্টে ফেল করায় গেল বুধবার বিকেলে নগরীর সুবিদবাজার বনকলাপাড়া এলাকার নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন স্কলার্সহোমের শাহী ঈদগাহ শাখার দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমান আহমেদ দানিয়াল (১৯)। স্কলার্সহোম থেকে তাকে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) প্রদান এবং কলেজের প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল আজমান ও তার পরিবারের সাথে দুর্ব্যবহারের কারণে কিশোর বয়সী ছেলেটি স্কলার্সহোমের ইউনিফর্ম পরেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের ‘দুর্ব্যবহারের’ বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়ায় আজমানের মায়ের প্রশ্ন, স্কলার্সহোম ‘আমার পুয়ারে বেইজ্জত করলো কেনে’।
আরও পড়ুন : নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করায় সুবিদবাজারে কলেজ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
এবিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ লে. কর্ণেল (অব.) মুনীর আহমেদ কাদেরী বলেন, আজমানের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোক প্রকাশ করছি। সে পরীক্ষায় খুব ভালো একটা ফলাফল করতে পারে নি। এজন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। সে মনঃক্ষুণ্ন হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমরা খুব গুরুত্বের সাথে বিষয়টা দেখছি। শিক্ষার্থীরা আজ বিভিন্ন দাবী নিয়ে এসেছেন, তা আমরা খুবই গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। তদন্ত করে যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন না করলেও আমরা তদন্ত করছি। শিক্ষার্থীদের দাবীদাওয়ার সাথে আমরা একমত আছি এবং তাদের পক্ষে আছি। তাদের দাবীদাওয়া নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করছি।