অংশীজনদের সাথে মাধ্যমিক শিক্ষকদের মতবিনিময়
স্বাধীনতার ৫৪ বছরে গ্রেড উন্নতিকরণ থেকে বঞ্চিত মাধ্যমিক শিক্ষকরা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ৩:২৯:২৮ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : “বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, সাব রেজিস্ট্রার, থানা সমাজসেবা অফিসার, পিটিআই ইন্সট্রাক্টর, থানা শিক্ষা অফিসার, পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক (পিটিআই) শিক্ষক পদসমূহ ১০ম গ্রেড ছিল। এরপর অন্য সবগুলো পদ ৯ম গ্রেডে উন্নিত হলেও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকপদটি এখনো পর্যন্ত ১০ম গ্রেডে থেকে গেছে। এছাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, পিটিআই ইন্সট্রাক্টর, থানা শিক্ষা অফিসার পদ পরস্পর বদলিযোগ্য ছিল। কিন্তু গ্রেড জটিলতার কারণে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়।”
গতকাল রোববার সিলেটে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেড বাস্তবায়ন বিষয়ে অংশীজনের সাথে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা তুলে ধরেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, “শিক্ষার উন্নয়নের কথা সব জায়গায় অহরহ শোনা গেলেও প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা নিরসন, নীতিমালা ও আইনের সংশোধন-সংযোজন-বিয়োজন, বিশৃঙ্খলা ও বৈষম্য অপসারণ, প্রশাসনিক ও আর্থিক বিষয়ের জটিলতা হ্রাস করে একটি কার্যকর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতি সীমাহীন অবহেলা পরিলক্ষিত হয়।” এসময় মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান শিক্ষকবৃন্দ। এরমধ্যে রয়েছে, স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, সরকারি মাধ্যমিক সহকারি শিক্ষকদের এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেডে উন্নিতকরণ ও ৪ স্তরের পদ সোপান প্রণয়ন, অবিলম্বে আঞ্চলিক উপপরিচালকদের প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষমতা সংরক্ষণসহ মাধ্যমিকের সকল কার্যালয়ের স্বাতন্ত্র্য ও মর্যাদা রক্ষা, বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার সকল শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন, বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল এবং মঞ্জুরী আদেশ প্রদান।
বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রি পদ ৯ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক ও সিলেটের জেলা শিক্ষা অফিসার এ এস এম আব্দুল ওয়াদুদ। সিনিয়র শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ও শহীদুল আলমের যৌথ পরিচালনায় সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সহকারী শিক্ষক আব্দুল জব্বার ও পবিত্র গীতা পাঠ করেন বিভাস রঞ্জন দাস। সভায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিলেট সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আবুল খায়ের। বক্তব্য রাখেন সিলেট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবু নছর মোহাম্মদ সুফিয়ান, শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম রব্বানী, কাশেম আলী সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আহাদুজ্জামান, সিনিয়র শিক্ষক শওকত হোসেন, আলী মর্তুজা ও সিলেট সরকারী অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেপী বেগম।
শিক্ষকরা জানান, ২০১২ সালে সহকারী শিক্ষকদের পদ ৯ম গ্রেডে উন্নিত করার ঘোষণা দিয়ে পরে বাস্তবায়ন করা হয়নি। ২০১৮ সালে ৯ম গ্রেডে সিনিয়র শিক্ষকের একটি পদ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু চাকুরির ৮ বছর পরে সিনিয়র শিক্ষকের পদে পদোন্নতি পেয়েও শিক্ষকদের আর্থিক কোন সুবিধা থাকে না। দীর্ঘদিন থেকে এসব অসামঞ্জস্যতা চলে আসলেও এসব নিরসনে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বক্তাগণ শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এসব সমস্যা নিরসন করে কার্যকর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সভাপতির বক্তব্যে জেলা শিক্ষা অফিসার এ এস এম আব্দুল ওয়াদুদ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আলোচনা সভা শেষে জেলা শিক্ষা অফিসার সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।