ছাত্রসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ছাত্রলীগ আদর্শ নিয়ে চললে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৩:০১:১৯ অপরাহ্ন
![<span style='color:#000;font-size:18px;'>ছাত্রসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা</span><br/> ছাত্রলীগ আদর্শ নিয়ে চললে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না <span style='color:#000;font-size:18px;'>ছাত্রসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা</span><br/> ছাত্রলীগ আদর্শ নিয়ে চললে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2023/09/P-1-1.jpg)
ডাক ডেস্ক : বাংলাদেশ ছাত্রলীগই এ দেশের সব সংকটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ছাত্রসমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কর্মকা-ে গর্বে আমার বুক ভরে যায়। যদি তারা আদর্শ নিয়ে চলতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, শহীদের খাতায় নাম দেখতে চাইলে দেখবো- ছাত্রলীগই বুকের রক্ত দিয়ে সব সংগ্রামে ছিল। এমনকি ৭৫ এর পরে ছাত্রলীগই প্রথম প্রতিবাদ করে। বাংলাদেশের যেকোনো দুর্যোগে ছাত্রলীগ সক্রিয় ছিল, অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ২০০৭ সালে আমাকে যখন গ্রেফতার করা হয়, তখন ছাত্রলীগই মাঠে নেমেছিল। এ ছাত্রলীগই হচ্ছে সেই শক্তি, যারা একদিন এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে। করোনায়ও ছাত্রলীগ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিপদের সময় আমার নির্দেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কাস্তে হাতে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। এজন্য তাদের প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস এবং আস্থা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে অনেক সংগঠন মানবাধিকারের কথা বলে। ৮১ সালে যখন আমি ফিরে এসেছি, তখন তো আমি মা-বাবা-ভাইবোন হত্যার বিচার চাইতে পারিনি। জিয়াউর রহমান খুনিদের ক্ষমতায় বসায়। প্রতি পদে পদে বাধা সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু কোনো বাধাই আমাকে আটকাতে পারেনি। আমি বাবার স্বপ্নপূরণ ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করে দেশে এসেছি। মাঠের পর মাঠ হেঁটেছি। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছি। দেখতে চেয়েছি, এদেশের মানুষের কী অবস্থা? আমার বাবা-মার রক্ত নিয়ে তারা দেশের কী করেছে?
বিএনপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা দেশের উন্নতি চোখে দেখে না, যাদের চোখ অন্ধ তাদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের আই ইন্সটিটিউট করে দিয়েছি। সেখানে ১০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে চোখ দেখালে ভালো হয়ে যাবে। হাওয়া ভবন খুলে হাওয়া খেতে পারছে না বলে তাদের এত দুঃখ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কোনো দিন এদেশের কল্যাণ চায় না। যাদের জন্ম ডিকটেটরের মাধ্যমে, মার্শাল ল’ জারির মাধ্যমে তারা নাকি গণতন্ত্র উদ্ধার করবে। অশিক্ষিত ও মূর্খদের হাতে ক্ষমতা গেলে দেশের কোনো অগ্রগতি হয় না। ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত উন্নয়ন করেছিলাম। কিন্তু খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় গিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতু করতে গিয়ে আমাদের দুর্নীতির বদনাম শুনতে হয়েছিল একটি ব্যাংকের এমডির জন্য। একটি বড় দেশ সেই এমডিকে পুনরায় এমডি বানানোর জন্য চাপ দিয়েছিল। তাকে এমডি পদে না রাখলে নাকি পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেবে। আমাদের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সেই ভদ্রলোক মামলাও করেছিল। কিন্তু আদালত তো তার বয়স কমাতে পারে না। সে মামলায় হেরে যায়। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন নিজে আদেশ দিয়ে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আমরা নিজের টাকায় পদ্মাসেতু করে দেখিয়েছি বাংলাদেশের মানুষ পারে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়ার সময় হাতুড়ি দিয়ে আমার কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। মা-বোনদের পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে। ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল আর আমি ছাত্রলীগের হাতে কলম ও বই তুলে দিয়েছি।
ছাত্রলীগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ দুর্যোগ-দুর্বিপাকে এগিয়ে আসে। ওয়ান-ইলেভেনে, কোভিড-১৯-এ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বন্যা, খরা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ছাত্রলীগ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। ছাত্রলীগ মানুষের ধান কেটে দেয়। তাই ছাত্রলীগের প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস, অনেক আস্থা। তারুণ্যের শক্তি একদিন এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এর আগে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন গেটের সামনে জড়ো হতে থাকেন। মিছিল-স্লোগানে টিএসসি গেইট, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গেইট, বাংলা একাডেমির সামনের গেইটসহ পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা মুখর হয়ে উঠে।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতারা অংশ নেন।