দোয়ারাবাজারের সীমান্ত পথে ভারতে যাচ্ছে শিং, মাগুর, কৈ ও পাবদা মাছ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ৪:১৫:২৪ অপরাহ্ন
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত দিয়ে দেদারসে ভারত যাচ্ছে পুকুরে চাষ করা বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। পাচারের তালিকায় এবার নতুন যুক্ত হয়েছে দেশীয় শিং, মাগুর, কৈ ও পাবদা মাছ।
প্রতিদিন ন্যূনতম ১০ ট্রাক মাছ পাচার হচ্ছে সীমান্তের ওপারে। যার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ভারতের বিভিন্ন এলাকায়। তাই চড়া মূল্যে বিক্রিতে অধিক মুনাফা লাভের প্রলোভনে সক্রিয় হয়ে ওঠেছে স্থানীয় চোরাকারবারিরা। ফলে স্থানীয় হাটগুলোতে এসব মাছের সংকট দেখা দিয়েছে চরম আকারে।
সীমান্তে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের টহল থাকলেও কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে অহরহ পাচার হচ্ছে মাছসহ বিভিন্ন মূল্যবান পণ্য সামগ্রী। এতে শুধু সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্বই হারাচ্ছে না বরং স্থানীয় পর্যায়ে দেখা দিয়েছে মাছের চরম আকাল। অপরদিকে, মাছের চাহিদা পূরণ তথা লোকসানের আশঙ্কায় হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় আড়তদাররা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজারের বিভিন্ন পুকুর থেকে সংগ্রহ করা শিং, মাগুর, কৈ ও পাবদা মাছ মিনি ট্রাকযোগে রাতের আঁধারে দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাঁশতলা, শিমুলতলা ও কলাউড়া সীমান্তের ১২৩৬ নং-পিলার এবং বগুলা ইউনিয়নের ইদুকোণা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বরফ দিয়ে ১০-১৫ কেজির প্যাকেট করা হয় পাবদা মাছের। শিং, মাগুর ও কৈ মাছ রাখা হয় পানিভর্তি বড় বড় ড্রামে। পরে প্রতি ট্রাকে ২৫ থেকে ৩০ মণ মাছ বোঝাই করে স্থানীয় বাংলাবাজারের গোপন আড়তে মজুত করা হয়। রাতে সেখান থেকে এগুলো পৌঁছানো হয় সীমান্তের বিভিন্ন জিরো পয়েন্টে। সেখানে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকেন এপার-ওপার দুপারের শ্রমিকরা। সুযোগ বুঝে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ট্রাকের মাছের ড্রাম ও প্যাকেটগুলো ভারতীয় ট্রাকে স্থানান্তর করেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, এক ট্রাক মাছ পাচারে ২০-২৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। তবুও ট্রাকপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা মুনাফা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, স্থানীয় হাটে পাবদা মাছের পাইকারি দর প্রতি কেজি ৩’শ থেকে সাড়ে ৩’শ টাকা। আর ঢাকায় পাঠালে প্রতি কেজি ৩’শ ৭০ থেকে ৪’শ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর চোরাইপথে ভারতে পাঠালে প্রতি কেজি সাড়ে ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা দরে বিক্রি হয়। তাতে সব খরচ পুষিয়ে ট্রাকপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা লাভ হয়।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি বদরুল হাসান জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ট্রাকযোগে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সরবরাহ করা হয়। তবে ভারতে পাচারের বিষয়টি আমার জানা নেই। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মণ জানান, দোয়ারাবাজার সীমান্ত দিয়ে ভারতে মাছ পাচারের বিষয়টি আমার জানা নেই। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি অবগত করব।