নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না ধূমপান
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ৪:৪৩:২৭ অপরাহ্ন
নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হলে নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে হবে। -ফ্রান্সিস টম্পসন
কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না ধূমপান। যতো সময় যাচ্ছে বেড়ে চলেছে ধূমপায়ির সংখ্যা। যত্রতত্র ধূমপানের মাত্রা বাড়ছে। এতে ধূমপায়িসহ অধূমপায়িরাও ক্ষতির শিকার হচ্ছে। ধূমপান বিরোধি আইন আছে। কিন্তু তার কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। আইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও গণপরিবহণসহ ১০টি স্থানে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ আইনের তোয়াক্কা না করে এসব স্থানে প্রকাশ্যে অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন ধরনের তামাকপণ্য সেবন করছে।
ধূমপান করছে সব বয়সের মানুষ যেখানে সেখানে, যখন তখন। প্রচলিত আইন অনুযায়ি-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভবন, গ্রন্থাগার, প্রেক্ষাগৃহ, প্রদর্শনী কেন্দ্র ও থিয়েটার হলের অভ্যন্তর, চতুর্দিকে দেওয়াল দ্বারা আবদ্ধ এক কক্ষবিশিষ্ট রেস্টুরেন্ট, শিশুপার্ক, খেলাধুলা ও অনুশীলনের জন্য নির্ধারিত স্থান এবং পাবলিক পরিবহণসহ ১০টি স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ। অথচ এসব স্থানেই রীতিমতো ধূমপানের উৎসব চলছে। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে,উল্লিখিত দশটি প্রতিষ্ঠানের আশেপাশেই প্রচুর দোকানে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি হচ্ছে বেশি।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, গ্রন্থাগার, প্রেক্ষাগৃহ, রেস্টুরেন্ট, শিশুপার্ক,বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন এলাকায় ধূমপায়িদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ অধূমপায়িরা।এসব স্থানে স্থায়ি ও ভ্রাম্যমাণ দোকান খুলে দিন-রাত সিগারেটসহ তামাকপণ্য বিক্রি করা হচ্ছে এবং অবাধে সেবনও চলছে। ফলে অধূমপায়িদের পাশাপাশি সেবাকর্মীরাও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। তামাকপণ্যের ধোঁয়া জনস্বাস্থ্য কিংবা পরিবেশের কী ক্ষতি করছে, সেটা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, তামাকের ধোঁয়ায় সাত হাজার রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। এরমধ্যে ৭০টি ক্যানসার সৃষ্টিকারী। ফুসফুস ক্যানসার, স্ট্রোক ও হৃদরোগ আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ পরোক্ষ ধূমপান। আর দেশে সিগারেটের মতো বিভিন্ন তামাকজাত পণ্যের ধোঁয়ায় বছরে প্রায় এক লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। সিগারেট সেবন না করেও অধূমপায়ি তিন কোটি ৮৪ লাখ মানুষ প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতি বছর ৬১ হাজার শিশু পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন অসুখে ভোগে। তাছাড়া, পরোক্ষ ধূমপানে বছরে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ৪ হাজার কোটি টাকা। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৪০ সাল। এটি অর্জন করতে হলে প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব, এটাই বড় প্রশ্ন।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকর অধিকতর শক্তিশালি করার লক্ষে সংশোধনের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে। কিন্তু এখনও আইনটি সংশোধন করা হয়নি। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় অবিলম্বে সব ধরনের তামাকজাত ক্ষতিকর পণ্যের আমদানি রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি নিষিদ্ধ ঘোষিত ১০টি স্থানে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।