সিলেটে সাঙ্গ হলো দুই দিনব্যাপী হাছন উৎসব
হাছন রত্নে ভূষিত হলেন ৭ বিশিষ্টজন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩:০৬:২৩ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক: সিলেটে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী আয়োজিত হাছন উৎসব। প্রয়াত মরমি কবি হাছন রাজা স্মরণে এ উৎসবের আয়োজন করেছিল হাছন রাজা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ সিলেট।
২দিন ব্যাপী অনুষ্ঠামালার শুরু হয় ২০শে ডিসেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। হাছন রাজার বিখ্যাত গান ‘ঘুড্ডি উড়াইলো মোরে’ দলীয় গানের সাথে বেলুন ও ঘুড়ি উড়িয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করেন স্থপতি ও নাট্যকার শাকুর মজিদ।
হাছন উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক ডাঃ জহিরুল ইসলাম অচিনপুরীর সভাপতিত্বে এবং জান্নাতুন নাজনীন আশা ও মোঃ কামারুজ্জামান মাছুম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ১ম দিন বৃহত্তর সিলেট বিভাগের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার বিশিষ্ট শিল্পীগণ হাছন রাজার লেখা গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। শুক্রবার ছুটির দিনে হাজার হাজার দর্শক শ্রোতার উপচে পড়া ভিড়ে আনন্দমুখর জমকালো আয়োজনটি রাত ১০টায় সমাপ্ত হয়।
২য় দিন শনিবার বেলা সাড়ে তিন টা হতে রাত ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নগরীর রিকাবিবাজারে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে উৎসবের সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী এবং হাছন উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ জহিরুল ইসলাম অচিনপুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিশিষ্ট নাট্যকার শাকুর মজিদ, প্রবীণ শিল্পী আকরামুল ইসলাম, আবু বক্কর সিদ্দিক ও জামাল উদ্দিন হাসান বান্না, লোক গবেষক সুমন কুমার দাশ, মোস্তফা সেলিম ও সৈয়দা আঁখি হক প্রমুখ। এ ছাড়া আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু সালেহ আহমদ ও প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সোলেমান হোসেন চুন্নু বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাছন রাজার স্বজাতকে চিনতে পেরে বাংলার ঘুমন্ত সমাজে তাঁকে পরিচিত করে জাগ্রত করে তুলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর গান ও জীবন ও সৃষ্টিকর্মকে নিয়ে উচ্চমানের গবেষণা খুব কমই হয়েছে। আগামী প্রজন্মের কাছে হাছনের গান ও তাঁর বাণী তথা মরমী মূল্যবোধ পৌঁছে দিয়ে সমাজের লোভ ক্রোধ অস্থিরতা ও হানাহানি রোধ করা সম্ভব বলে বক্তারা মত প্রকাশ করেন।
সমাপনী পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয় হাছন রাজার লেখা গান ‘বাউলা কে বানাইলো রে’ শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে পরিবেশনের মাধ্যমে। পরে হাছন রাজার জন্মদিন উপলক্ষে কেক কেটে অনুষ্ঠানটি আরম্ভ হয়।
সমাপনী পর্বে সাতজন বিশিষ্ট গুণীজনকে ‘হাছনরত্ন সম্মাননা’ পদক দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন শিল্পী আকরামুল ইসলাম ও সেলিম চৌধুরী, নাট্যকার শাকুর মজিদ, শিল্পী উজির মিয়া (মরণোত্তর), আবদুল লতিফ (মরণোত্তর) ইয়ারুন্নেসা (মরণোত্তর), ও বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর)। এছাড়া বিজয়ের মাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোশাহিদ আলীকে বিশেষ সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়।
আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয়। এতে দেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা হাছন রাজার গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। এর আগে ‘হাছন রাজার স্বরূপ’ শীর্ষক ভিজুয়্যাল ডকুমেন্টরি উপস্থাপনা করেন বিশিষ্ট গবেষক ও নাট্যকার শাকুর মজিদ। এ ছাড়া সংগঠনের দায়িত্ব আয়োজক কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি বিরহী কালা মিয়া, আসাদুজ্জামান নুর, এস এম শাহজাহান, ইকবাল আহমেদ, আব্দুল খালিক, এ কে এম কামরুজ্জামান মাছুম, সায়েম আহমেদ, সৈয়দ নিয়াজ আহমদ আফজাল হোসেন, দবিরুজ্জামান দীপু, আমির হোসেন পাবেল, আল আমিন নানু গাজী রুমেল আহমদ, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলমগীর, সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক, মিজানুর রহমান মিজান, সাংগঠনিক সম্পাদক, এম রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক, শাহ আলম চৌধুরী মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক তারেক ইকবাল চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক এম এ এস মাছুম খান, অর্থ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন পীর, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আমির উদ্দিন পাভেল, ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক সোলেমান হক টিপু প্রমুখ।