স্পট এয়ারপোর্ট থানার লুসাইন গ্রাম
ফেসবুকে ভাতিজির বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত স্ট্যাটাস দেয়ায় ছোটভাইর হাতে বড়ভাই খুন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১:৩২:০৩ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : ভাতিজির বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আপন ছোট ভাইয়ের হাতে খুন হয়েছেন সিলেট সদর উপজেলার এয়ারপোর্ট থানার খাদিমনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মুজিবুর রহমান (৪৮)। তিনি এয়ারপোর্ট থানার খাদিমনগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের লুসাইন গ্রামের মৃত মনু মিয়ার ছেলে। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছোট ভাই সৌদি প্রবাসী মুহিবুর রহমান ময়বুর ও তার সহযোগীরা পালিয়ে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, সে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত মুজিবুর রহমানের সাথে তার পরিবারের ভাইসহ আত্মীয়-স্বজনদের ভূমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিলো। এই ভূমি বিরোধের মধ্যেও নতুন করে সৃষ্টি হয় পরিবারের একটি বাল্যবিবাহের ঘটনা।
সূত্র জানায়, মূলত নিহত মুজিবুর তার মৃত বড় ভাই ছাইফুর রহমানের মেয়ের বাল্য বিবাহ দিতে অস্বীকৃতি জানান। তার অমতে ছোট ভাই মুহিবুর রহমান ময়বুর ও মেয়ের মা মিলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন। এর প্রতিবাদ জানান নিহত মুজিবুর। এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দায়ী করে নিহত মুজিবুর রহমান ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘জনপ্রতিনিধির কাজ কি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বাল্যবিবাহে সমর্থন দেওয়া? ৩ নং খাদিমনগর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার টাকার বিনিময়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বাল্যবিবাহে সমর্থন করে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন আগে অপ্রাপ্ত বয়স্ক একটি মেয়ের জন্মনিবন্ধনে দুই নাম্বারি করে বয়স বাাড়িয়ে নতুন জন্মনিবন্ধন করে দিয়ে বাল্যবিবাহ হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে মেম্বার। যেখানে ২০০৯ সালে মেয়ের জন্ম জালিয়াতি করে ২০০৫ সালে করে দিয়েছে এবং মেম্বার সরাসরি এই কাজে সহায়তা করেছে। সত্যতা জানার পরেও টাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি হয়েও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখন জনপ্রতিনিধি যদি দেশের আইন না মেনে বাল্যবিবাহে সমর্থন করে তাহলে এসব জনপ্রতিনিধি কাছ থেকে কি আশা করা যায়? ”
অভিযোগ উঠেছে, ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসের জেরে গতকাল বুধবার দুপুরে মারামারিতে জড়ান মুজিবুর ও ছোট ভাই ময়বুর। এক পর্যায়ে ময়বুর হাতের লাঠি ও দা দিয়ে আঘাত করলে মুজিবুর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের লাশ ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: দিলোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি নিহতের পরিবারের খোঁজ খবর নেন। লাশ দেখতে হাসপাতালেও যান। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আনিসুর রহমান জানান, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।