হযরত শাহজালাল (রহ.) এর লাকড়ি তোড়া উৎসব সম্পন্ন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ২:৪১:৪৪ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে বার্ষিক ওরস শরীফ উপলক্ষে ৭০৬ বছরের প্রাচীন লাকড়ি তোড়া উৎসব গতকাল শুক্রবার সম্পন্ন হয়েছে। এই উৎসবকে ঘিরে ভক্তদের ঢল নামে।
গতকাল জুমার নামাজের পর প্রচুর সংখ্যক ভক্ত অনুরাগী, আশেকান ভক্তিমূলক গান ও বাদ্যযন্ত্রের সুরে মুখরিত করে তোলেন মাজার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে লাকড়ি সংগ্রহের টিলা পর্যন্ত। এসময় কারও পরনে ছিল লাল জামা, কারও মাথায় ছিল লাল পট্টি। হাতে ছিল লাল পতাকা আর লম্বা দা-তরবারি। ঐতিহ্য অনুযায়ী ওরসের তিন সপ্তাহ আগে লাকড়ি সংগ্রহ করা হয়, যা লাকড়ি তোড়া নামে পরিচিত।
এর আগে জুমার নামাজের পর দরগাহ প্রাঙ্গণে বেজে ওঠে নাকাড়া (ঢাক জাতীয় বাদ্যযন্ত্র)-এর এক বিশেষ ধ্বনি। যা শতাব্দী পুরনো এক আধ্যাত্মিক ডাকে রূপ নিয়েছে। সেই মুহূর্তেই সমস্বরে উচ্চারিত হয় ‘শাহজালাল বাবা কি জয়’ এবং সেই ধ্বনির সঙ্গেই হাজার হাজার ভক্ত পায়ে হেঁটে রওনা হন শহরতলির লাক্কাতুড়া চা-বাগানের নির্দিষ্ট টিলার দিকে। এ সময় সৃষ্টি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশের।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই সিলেট শহর, শহরতলী, বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে হাজারো ভক্ত-আশেকান বাদ্য বাজিয়ে, শ্লোগান তুলে দলে দলে হাজির হন হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে দরগাহ প্রাঙ্গণে। ভক্তরা মিছিল সহকারে লাক্কাতুরা চা-বাগানের দিকে রওনা হন এবং সেখান থেকে লাকড়ি সংগ্রহ করে উৎসবের অংশ হিসেবে দরগাহে ফিরে আসেন। শুধু সাধারণ ভক্তই নয়, বাউল সংগঠন, খানকা শরিফ ও বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আসা মানুষজনও এই উৎসবে যোগ দেন। কেউ নাচ-গান করে, কেউ গজল পাঠ করে, আবার কেউ নীরবে ভক্তি ভরে অংশ নেন এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে। বহু প্রজন্ম ধরে এভাবেই পালিত হয়ে আসছে ‘লাকড়ি তোড়া’-যা অনেকেই ‘সিলেট বিজয় দিবস’ বলেও উদযাপন করেন।