দক্ষিণ সুরমায় আ’লীগ নেতার লাশ উদ্ধার, ছেলেকে ৫ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ৭:৫৩:২৯ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক ॥ সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক হত্যার ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা না করায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছে। নিহত রাজ্জাকের ছেলে আসাদ আহমদকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দক্ষিণ সুরমা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ারুল কামাল বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নাম মামলার বিবরণে সন্দেহজনক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, হত্যা মামলায় নিহত ব্যক্তির ছেলেকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। তবে রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির পরিবার প্রথম থেকে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে আসছে। তবে ঘটনাটি আত্মহত্যা নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। যেভাবে নিহত ব্যক্তির শরীরে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাতে আত্মহত্যা মনে হয়নি। পরিবার মামলা না করায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।’ পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, শনিবার দুপুরে আবদুর রাজ্জাকের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা ছুরিটি ফরেনসিকের জন্য পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের তেলিরাই গ্রামে নিজ বাসার ছাদের সিঁড়ির পাশে একটি কক্ষ থেকে আবদুর রাজ্জাকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
পরিবারের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে আবদুর রাজ্জাক ছাদে হাঁটার জন্য উঠেছিলেন। এরপর সকাল ৯টার দিকে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ দেখার পর পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, আবদুর রাজ্জাকের পেট, বুক ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাতের গভীর চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাশের পাশ থেকে একটি ২২ ইঞ্চি লম্বা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে লাশ উদ্ধারের আগ পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির বাড়িতে কাউকে ঢুকতে কিংবা বের হতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে শুধু ওই বাড়ির গৃহকর্মী সকাল আটটার দিকে বাড়িতে ঢোকেন। তিনি বাড়িতে যাওয়ার পর আবদুর রাজ্জাককে তাঁর কক্ষে পাননি। এক পর্যায়ে সিঁড়ির ঘরে লাশটি দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এ সময় সিঁড়ির দরজা তালাবদ্ধ ছিল, সিঁড়ির চাবি আবদুর রাজ্জাকের কাছেই ছিল।
পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত আবদুর রাজ্জাকের এক ছেলে ও এক মেয়ে। দুজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। সন্তানদের মধ্যে মাস দুয়েক আগে সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারাও করে দিয়েছিলেন তিনি। শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। চিকিৎসার জন্য ভারতেও গিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গত বছরের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে একটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার। মামলা থাকলেও তিনি নিজ বাড়িতেই অবস্থান করতেন।



