দেশে ৩২ ঘণ্টায় চারবার ভূমিকম্প, সর্বত্র উদ্বেগ-আতংক
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৪:৩০:৫৭ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : দেশে গত ৩২ ঘণ্টায় চারবার ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শনিবার সকালে একবার নরসিংদীতে ও সন্ধ্যায় রাজধানীতে পরপর দু’বার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা। এ নিয়ে সর্বত্র বিরাজ করছে উদ্বেগ-আতংক।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে রাজধানীতে রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। এর এক সেকেন্ড পর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে দ্বিতীয়বার ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। একটির উৎপত্তিস্থল বাড্ডায়, আরেকটির উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে।
এর আগে ঐদিন সকালে নরসিংদীতেই আরও একটি মৃদু ভূমিকম্প হয়। জেলার পলাশ উপজেলায় সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩।
এদিকে, ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের সময় সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে শামসুন্নাহার হলের তিনজন, কুয়েত মৈত্রী হলের একজন, বেগম রোকেয়া হলের একজন এবং মাস্টারদা সূর্যসেন হলের একজন আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনই ছাত্রী।
শামসুন্নাহার হলের ছাত্র সংসদের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ইসরাত জাহান সুমনা সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে পায়ে গুরুতর আঘাত পান। ধারণা করা হচ্ছে, তার পা ভেঙে যেতে পারে। শামসুন্নাহার হলে আহত অন্য দুইজনকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থী সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হন। বেগম রোকেয়া হলের একজন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাছাড়া মাস্টারদা সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে হাতে ব্যথা পান।
শুক্রবারের ভূমিকম্প সারা দেশেই অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই আতঙ্কে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। এতে শিশুসহ ১০ জন নিহত ও ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। সবচেয়ে বেশি- পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে নরসিংদীতে। ঢাকায় চার ও নারায়ণগঞ্জে একজন মারা যান। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে অনেকেই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন। এ ছাড়া, কিছু ভবন হেলে পড়ে ও ফাটল দেখা দেয়।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশষ ও পুর প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম সিলেটের ডাককে বলেন, শনিবারের ভূমিকম্পগুলো আফটারশক। আফটারশক সাধারণত কম মাত্রার হয়ে থাকে। এটি বড় ভূমিকম্পের ৭২ ঘণ্টার মাঝে হয়ে থাকে। এখন যে ছোট ছোট ভূমিকম্প হচ্ছে তা বড় ভূমিকম্পের আভাস। আমাদের এখানে তো বড় ভূমিকম্প হয়েছিল অনেক আগে। এখানে বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হয়ে আছে। এক্ষেত্রে আমাদের স্বল্প ও দীর্ঘ সময়ের প্রস্তুতি রাখতে হবে। শুক্রবার আমরা দেখেছি ভূমিকম্পের ফলে বেশকিছু পাওয়ার স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে পাওয়ার স্টেশন এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।




