কমলগঞ্জে জমে উঠেছে মাছের মেলা

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পৌষ সংক্রান্তি উৎসব ছিলো গতকাল রোববার। এ উৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে তৈরী হয় নানা ধরনের পিঠা পুলি ও সুস্বাদু খাবার। তার একটি বড় অংশ হচ্ছে-বাজার থেকে বড় আকারের মাছ কিনে খাবার তৈরী করা। বাঙ্গালীর চিরায়ত সংস্কৃতি পৌষ-সংক্রান্তি উৎসব উপলক্ষে গত শনিবার কমলগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজারে বসেছে মাছের মেলা। পৌষ সংক্রান্তির আগের দিন (পিঠা-চিড়ার দিন) থাকায় বছরের এদিনে হাটবাজারে বড় বড় মাছের দেখা মেলে। এতে সনাতন সম্প্রদায়ের লোকেরা যেমন ব্যস্ত ছিলেন, তেমনি বাজারে মাছ কিনতে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের ভিড়ও দেখা গেছে। কেউ আসছেন মাছ কিনতে, আবার কেউ বড় আকারের মাছ দেখতে।
যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই রেওয়াজকে ধারণ করে গত শনিবার সকাল থেকে কমলগঞ্জের ভানুগাছ, শমশেরনগর, আদমপুর ও মুন্সীবাজারে বসা বিশাল মাছের মেলায় বিভিন্ন জাতের বড় আকারের মাছ সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। একদিনের এই মেলা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।

ভানুগাছ বাজারের মাছের মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি মাছের দোকানে বড় আকারের মাছ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। মেলায় উঠেছে বাঘমাছ, মাশুল, বোয়াল, কাতল, চিতল, রুই, কাতলা, নারিং সহ প্রায় সব ধরনের মাছ। মেলায় সামুদ্রিক রূপচাঁদা, কোরাল, কাকিয়া ও কাঁকড়া উঠেছে। ৫ কেজি ওজন থেকে শুরু করে ২৫-৩০ কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে মেলায়। সহজে হাট-বাজারে পাওয়া যায় না, এমন মাছও সাজিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। প্রতিটি মেলায় বেশ চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা।
ভানুগাছ বাজারের মাছ-বিক্রেতা রাসেল মিয়া এবারের মেলায় ১৭ কেজি ওজনের বাঘ মাছ, ২৫ কেজি ওজনের বোয়াল মাছ ও ২৬ কেজি ওজনের মাশুল মাছ নিয়ে বসেছেন। তিনি বাঘ মাছটির দাম হেঁকেছেন ৪০ হাজার টাকা, বোয়াল মাছ ৩৫ হাজার টাকা আর মাশুল মাছ ২৫ হাজার টাকা। ক্রেতারা ২০ হাজার টাকা বললেও তিনি বাঘ মাছটি বিক্রি করেননি। মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান, ১১ কেজি ওজনের বাঘ মাছের দাম ১৮ হাজার টাকা হাঁকছেন।
বাজারে আসা ক্রেতা বিক্রম দাস, সঞ্জয় পাল ও সুজিত দেবনাথ জানান, এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বাজারে নানা জাতের বড় আকারের মাছ উঠে। বাজারে আগত ক্রেতারা জানান, মেলায় নানা জাতের বড় আকারের মাছ উঠলেও দাম চড়া।
মাছ বিক্রেতারা বলেন, দাম বড় কথা নয়। মূলত ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে মেলায় বড় আকারের মাছ সরবরাহ করা হয়। দাম চড়া বলা হলেও ক্রেতারা দর কষাকষি করে কিনে নিচ্ছেন।