চোরাই সিন্ডিকেটের কোটির টাকার অবৈধ পণ্য জব্দ করলো গোয়েন্দারা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০২৪, ৬:৪৯:০৫ অপরাহ্ন
শহীদনূর আহমেদ, (সুনামগঞ্জ) থেকে : সুনামগঞ্জে সক্রিয় চোরাকারবার সিন্ডিকেট। সংঘবব্ধ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে সীমান্তের চোরাই পথে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে চিনি, কসমেটিক, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন অবৈধ পণ্য। পুলিশ, বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তি চোরাকারবারিদের যোগসাজশে চোরাই এসব পণ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে অন্যত্র।
চোরাই পণ্য বৈধ্যভাবে বাজারজাত করতে নিচ্ছে নানা প্রতারণার আশ্রয়। আদালতের নির্দেশনা নকল করে কুরিয়ার সার্ভিস পরিবহণের মাধ্যমে অবৈধ পণ্য বৈধ করার রমরমা বাণিজ্য করে আসছে চক্রটি। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসলেও এবার গোয়েন্দার জালে আটকা পড়ে সিন্ডিকেট চক্রের কোটি টাকার চালান।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর সহায়তায় সুনামগঞ্জের এসএ পরিবহন পার্শ্বেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসে অভিযান চালিয়ে গত বুধবার রাতে দীর্ঘ অভিযান চালিয়ে ১৮৭ বস্তা ভারতীয় পণ্য আটক করে টাস্কফোর্স।
সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পরিবহনের কাউন্টারে সুনামগঞ্জ সদরের এসিল্যান্ড এমদাদুল হক শরীফের নেতৃত্বে পুলিশ বিজিবি-আনসার-জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা দলের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ১২৪ বস্তা ফুচকা, ১৬ বস্তা কাজু বাদাম, ৩ বস্তা কিসমিস, ৩০ বস্তা কসমেটিকস, ৪ বস্তা পলিথিন, ১ বস্তা চকলেট, ৮ বস্তা বিস্কুট সহ ১৮৭ বস্তা ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। এর আনুমানিক মূল্য কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন এনএসআইয়ের উপ-পরিচালক আরিফুর রহমান, সহকারি পরিচালক কৌশিক আহমদ কনক, সদর থানার ওসি মো. খালেদ চৌধুরী, বিজিবি প্রতিনিধি নায়েব সুবেদার বিল্লাল।
জানা যায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর নকল করে আদালতে নিলামে বিক্রিত বানোয়াট নির্দেশনাপত্রের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য কুরিয়ার পাশের্^লের সাহায্যে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সংঘবদ্ধ চক্রটি। গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। এসময় আইনশৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় চোরাকারবারিরা।
এসএ পরিবহনের সুনামগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক শওকত কামাল জানান, আদালতের নিলামের রশিদ, সীমান্ত হাটের কার্ড, এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে সীমান্ত এলাকার বেশ কয়েকজন লোক এসব পণ্য ঢাকায় পাঠানোর জন্য বুকিং দেয়। পরে এগুলোর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে কাউন্টার থেকে এসব পণ্য জব্দ করে নিয়ে যান আইনশৃংখলা বাহিনীর লোকজন। তারা আমাদের কাছ থেকে আরও কিছু নথি নিয়ে গেছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালেদ চৌধুরী জানান, সীমান্ত এলাকা দিয়ে এসব পণ্য সুনামগঞ্জ শহরের এসএ পরিবহনের কাউন্টারে আসে। পরে পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থার নেতৃত্বে টাস্কফোর্স এসব পণ্য আটক করে।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে সদর উপজেলা (ভূমি) কমিশনার এমদাদ শরীফ জানান, অভিযান চালিয়ে ১৮৪ বস্তা অবৈধ পণ্য জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।