সিলেট ও সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ৭
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:৫১:৪৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : তীব্র তাপদাহের মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জে আকষ্মিক বজ্রপাতে ৭জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে সিলেটের জৈন্তাপুরে ২ জন, কানাইঘাটে ২জন, কোম্পানীগঞ্জে ১ জন, গোয়াইনঘাটে ১জন ও সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে ১ জন নিহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে ঝড়-বৃষ্টির সাথে বজ্রাঘাতে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
জৈন্তাপুর (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, দুপুরে উপজেলায় আকস্মিক বৃষ্টির সাথে বিকট শব্দে বজ্রপাত শুরু হলে ওয়াপদা বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন রাস্তায় থাকা আগফৌদ গ্রামের নূরুল হকের ছেলে নাহিদ আহমদ (১৩) ও একই ইউনিয়নের ভিত্রিখেল ববরবন্দ গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে অটোরিক্সা চালক আব্দুল মান্নান মনই (৪৫) নিহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করেছে বলে জানিয়েছেন জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম।
কানাইঘাট (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, দুপুরে রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে কানাইঘাট উপজেলায় বজ্রপাতে নিহত হন উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নের কেওটিহাওর গ্রামের আব্দুল মিয়ার ছেলে কালা মিয়া (৩০) ও বাড়ির পাশের নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে পৌরসভার বাসিন্দা দলইমাটি গ্রামের নুর উদ্দিন (৫৭)। এ সময় তার সঙ্গে মাছ ধরতে আরো ৩০/৪০ জন সেখানে গিয়েছিলেন। বজ্রপাতে সেখানে থাকা আরো ৪ জন আহত হয়েছেন।
কানাইঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিকেল ৪টার দিকে দু’জনের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, দুপুরে গোয়াইনঘাটের ভিত্রিখেল হাওর গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী রুকসানা বেগম (৪৭) বজ্রপাতে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। একই সময় বজ্রপাতে আহত হন নিয়াগোল গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে ইসমাইল আলী (১৮)। তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, কোম্পানীগঞ্জে হাওর থেকে হাঁস আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মো. নেজামুল হক (২১) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ইছাকলস ইউনিয়নের পুটামারা গ্রামের ছুরফান মিয়ার পুত্র। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি বদিউজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।
নেজামুল হকের বড় ভাই এমদাদুল হক সুমন বলেন, আমাদের নিজস্ব হাঁসের খামার রয়েছে। বজ্রপাতের সময় আমরা দু’জন হাঁস আনতে বাড়ির পাশে হাওরে যাই। তখন বজ্রপাত হলে নেজামুল পড়ে যায়। এ সময় তার শরীরে হাত দিতেই বুঝতে পারি, তার শরীর পুড়ে গেছে। পরে আমার চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন গেলে লাশ উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিশ্বম্ভরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, উপজেলায় বজ্রপাতে দ্বীন ইসলাম (৬৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের মৃত সলতু মিয়ার ছেলে। দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের সিরাজপুর চরপারা গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে চারা ক্ষেতে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কালাম হোসেন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাড়ির সামনে চারা ক্ষেতে তিনি লাকড়ি শুকাতে দিয়েছিলেন। দুপুরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন দেখে লাকড়িগুলো আনতে গেলে আকষ্মিক বজ্রাঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বজ্রপাতে নিহত কৃষককে আর্থিক সহায়তা করা হবে।
এদিকে, সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ সজিবুর রহমান জানান, গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেটে বজ্রসহ বৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ১১.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিলেটের তাপমাত্রা ছিল ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস জানায়া, তীব্র খরতাপের পর আকস্মিক ভারী বৃষ্টি শুরু হয়।