শহীদের রক্তে অর্জিত দেশে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারের দোসরদের স্থান হবে না
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ৫:২২:৪৩ অপরাহ্ন

———– রুহুল কবির রিজভী
ডাক ডেস্ক: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট রেজিমের সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা হয়েছে, হামলা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার, গুম ও খুন করা হয়েছে। তারপরও বিএনপির একজন নেতাকর্মীকেও লক্ষ্য থেকে তারা সরাতে পারেনি। দলের প্রতিটি নেতাকর্মী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে লড়াইয়ে কাজ করে গেছেন। দেশের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। সর্বশেষ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চ‚ড়ান্ত লড়াইয়ে অনেক প্রাণ গেছে। এতো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারের দোসরদের স্থান হবে না।গতকাল রোববার বেলা আড়াইটায় বিয়ানীবাজার উপজেলা সদর ও বারইগ্রাম বাজারে পৃথক দু’টি পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের ১১ জন শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, শহীদদের রক্ত কোনভাবেই বৃথা যেতে দেয়া হবে না। গণখুনি ও তাদের সকল দোসরদের বিচার দেশের মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ। পথসভায় সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে চূড়ান্ত লড়াইয়ে সিলেট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রাণ দিয়েছেন গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার মানুষ। দীর্ঘদিন থেকে এই এলাকার মানুষ উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। জনগণের রায়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে এই বঞ্চনা আর থাকবে না ইনশাআল্লাহ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আমরা বিএনপি পরিবারের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, কাতার বিএনপির সভাপতি শরীফুল হক সাজু , সিদ্দিক আহমদ, সাইফুর রহমান, কুদ্দুস আহমদ, কামাল হোসেন, এনাম উদ্দিন, গুলজার আহমদ রাহেল, হোসেন আহমদ দোলন, জালাল উদ্দিন প্রমুখ। জুড়ীতে স্বর্ণা দাসের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ এমএম সামছুল ইসলাম, জুড়ী (মৌলভীবাজার) থেকে জানান, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় জনগণের আস্থা নিয়ে ড. ইউনুস সরকারে এসেছেন। আমাদেরও এই সরকারের প্রতি আস্থা আছে। তবে, গণতান্ত্রিক চর্চাকে অব্যাহত রাখতে দ্রæত নির্বাচন দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল রোববার জুড়ী উপজেলার পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়নের খাকটেখা কালনীগড় বাজারে বিএসএফের গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ পরবর্তী পথসভায় তিনি একথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ভারতের সেবাদাস স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী আক্রমণাতœক হয়ে উঠেছে। হাসিনার পতনের পর সীমান্তে লাশের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে জোরালো প্রতিবাদ জানানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ফেলানীর মত সীমান্তে স্বর্ণা দাস কে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বিএসএফ। একটি নিষ্পাপ কিশোরী মেয়েকে হত্যার মতো ধৃষ্টতা যে দেশ দেখাতে পারে; সেই দেশকে কেন কড়া প্রতিবাদ জানানো হলো না বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার এজেন্টরা কখনোই ড. ইউনুস এর সফলতা চাইবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার এজেন্ট। তিনি কাতারের রাষ্ট্রদূত থাকতে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের পাসপোর্ট রিনিউ করতেন না। এ কারণেই অনেক বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে হয়েছিল। এদের মত এজেন্টরা অন্তবর্তীকালীন সরকরকে প্রতিনিয়ত বিতর্কিত করবে উল্লেখ করে তার পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। আমরা এমন এক নেত্রীর দল করি যিনি স্বৈরাচারী সরকারের কাছে মাথা নত করেননি উল্লেখ করে যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, স্বৈরাচার হাসিনার নির্দেশে বেগম খালেদা জিয়ার উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তারপরও তিনি স্বৈরাচারী সরকারের কাছে মাথা নত করেনি। গত ১৫ বছরের আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার পাশাপাশি তারেক রহমান গোটা জাতিকে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে যেভাবে প্রস্তুত করেছিলেন, তার ফসল ছাত্র-জনতার বিপ্লব। কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শরিফুল হক সাজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আলমগীর কবীর, আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু। আমরা বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে বিএসএফের গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।