রাজনৈতিক লেবাসে কিশোরগ্যাং সদস্যরা ছিনতাইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে, একমাসে ৫৭ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নগরীতে হঠাৎ ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ মার্চ ২০২৫, ৩:১০:১২ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট নগরীতে ছিনতাইকারীরা হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চালক-পথচারী এমনকি নারী থেকে শুরু করে সবাই শিকার হচ্ছেন ছিনতাইয়ের। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালালেও তাদেরকে কোনভাবে রোধ করা যাচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক লেবাসে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ও কলোনীতে বসবাসকারী কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা ছিনতাই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিশিষ্টজনেরা বলছেন, ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে এখনি কার্যকর পদক্ষেপ না দিলে রমজান এবং ঈদে পরিস্থিতি আরো বেগতিক হতে পারে।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট এমাদ উল্যাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, পুরো দেশের মতো সিলেটেও ছিনতাই, রাহাজানি ও চুরি হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। এখনই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে রমজান ও ঈদে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর সিলেট মহানগরীর লামাবাজারসহ বেশিরভাগ ফাঁড়ি এখনো সচল হয়নি। দ্রুত এসব ফাঁড়ি চালুর তাগিদ তাঁর। চুরি-ডাকাতিরোধে প্রয়োজনে কমিউনিটি পুলিশিংকে সচল করার পরামর্শ তার।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা ও বর্তমানে নগরীর বালুচরে বসবাসকারী সৈয়দ লোকমান গত শনিবার রাত ২টায় নগরীর শাহী ঈদগাহে ছিনতাইয়ের শিকার হন। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, মিরবক্সটুলাস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার স্ত্রীর সিজার হয়েছে। স্ত্রীকে দেখে রাত ২টায় পায়ে হেঁটে তিনি বালুচর যাচ্ছিলেন। পথে শাহী ঈদগাহ ‘আল্লাহু চত্বর’ এলাকায় মোটর সাইকেল আরোহী দুজন ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে। তারা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা দুই হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকার বাসিন্দা লিপন আহমদ জানান, সম্প্রতি মেন্দিবাগ এলাকার একটি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বন্দরগামী একটি সিএনজি অটোরিক্সায় উঠেন। রিক্সায় আরো দুজন যাত্রী ছিল। সোবহানীঘাট আসার পর চালক আম্বরখানার দিকে যেতে উদ্যত হয়। পেশায় সিএনজি অটোরিক্সা চালক লিপন এতে কিছুটা হতচকিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে জেলরোডে গিয়ে তিনি চলন্ত গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। গাড়ি থেকে নেমে দেখেন, তার পকেটে থাকা লাইসেন্সের ১০ হাজার টাকা নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ছিনতাইয়ের সাথে অবশ্যই সিএনজি অটোরিক্সা চালকের যোগসাজস রয়েছে।
কোতয়ালী থানার ওসি জিয়াউল হক নগরীতে ছিনতাইকারীদের অপতৎপরতা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গত এক মাসে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরী থেকে ৫৭ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে। আর গত ৪ দিনে ৫টি চাকুসহ ১০ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ছোট ও বড় দলে বিভক্ত হয়ে নগরীতে টহল দিচ্ছে। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন বলে জানান ওসি।