যাদুকাটায় বালু লুটে বিজিবির উদ্বেগ, পার কাটা ঠেকাতে প্রয়োজন সকল বাহিনীর সহযোগিতা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ৫:০১:৫৪ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের যাদুকাটায় বালু লুটের ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সুনামগঞ্জ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, যাদুকাটায় একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র দিনে রাতে ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতো এতো মানুষকে বিজিবি একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে বালু লুট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। গতকাল বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি অধিনায়ক আরো বলেন, বালু লুট বন্ধে পুলিশ জেলা প্রশাসনসহ সবার যৌথ প্রচেষ্টা দরকার। সুনামগঞ্জের পর্যটন স্পট শিমুল বাগান, যাদুকাটাসহ পর্যটনকে রক্ষা করতে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। বিজিবি একা দিনে রাতে বালু রক্ষায় থাকলে সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে যাবে। তাই, দ্রুত সবাইকে বালু রক্ষা কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, কিছু কুচক্রি মহল এবং অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতে করে ব্যাপকভাবে নদীর পাড় ভাঙ্গণের ফলে ভবিষ্যতে লাউরগড় বিওপিসহ নিকটবর্তী গ্রামের অনেক বাসিন্দা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিজিবির সিও বলেন, গভীর রাতে ইজারা বহির্ভূত এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রবণতা বৃদ্ধি পেলে বিজিবি ব্যতীত অন্য কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উক্ত এলাকায় থাকে না। তখন বিজিবি এককভাবে প্রাণপণ প্রচেষ্টা করে যেন অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা যায়। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় নিয়মিত টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি লাউরগড় বিওপিতে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য ও নৌযান মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সেটি অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের নৌকা ও শ্রমিকের তুলনায় অনেক কম। এ ব্যাপারটি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। অতএব, সঠিক সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরী।
দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পর্যটন স্পট শিমুলবাগান, বারেকটিলা ও যাদুকাটা নদী রক্ষার্থে প্রশাসন, স্থানীয় জনগণ এবং গণমাধ্যমের আন্তরিক সহযোগিতা একান্তভাবে প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের লাউরগড় একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকা। সেখানে ৫-৬টি চোরাচালানের রুট রয়েছে। যা আমরা নিয়মিতভাবে সুরক্ষা নিশ্চিত করে যাচ্ছি। সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র, মাদক যেন না আসে এবং সীমান্ত হত্যা যেন না হয় সেটা বিজিবি’র মূল কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে বিজিবি দিনে ও রাতে সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকলে সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়বে। ফলশ্রুতিতে অস্ত্র, মাদক চোরাচালানসহ সীমান্ত হত্যা বেড়ে যেতে পারে যা দেশের জন্য সুখকর।
এই প্রেক্ষিতে বিজিবি’র পক্ষ হতে জেলা প্রশাসনকে লিখিত ও মৌখিকভবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে এবং সেখানে কিছু প্রস্তাবনা আমরা দিয়েছি কেননা এটা বিজিবি’র একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। প্রস্তাবনা সমূহ হচ্ছে, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে ১টি স্থায়ী পোস্ট স্থাপন, নিয়মিতভাবে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করা, মজবুত খুঁটি ও পতাকার মাধ্যমে ইজারাকৃত এলাকাটি স্পষ্ট করা এবং নৌ-পুলিশের সার্বক্ষণিক টহল তৎপরতা বজায় রাখা। এছাড়াও, অনিয়ম সমূহের সাথে ইজারাদারের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে ইজারা বাতিল করার পরামর্শ দেন তিনি। এর আগে যাদুকাটায় বালু লুটে বিজিবি অভিযান পরিচালনা করে।
গেলো কয়েকদিন ধরে সুনামগঞ্জের যাদুকাটায় নদীর দু’পাড় কেটে কোটি কোটি টাকার বালু লুট করেছে একটি চক্র। এতে হুমকিতে পর্যটন স্পট সহ ২০ টি গ্রাম।




