শাবিতে প্রথমবারের মতো ক্লাইমেট অলিম্পিয়াড
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচাইতে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সিলেট অঞ্চল
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৪:২১ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক ॥ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে প্রস্তুত ও সক্ষম করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘রিজিওনাল ক্লাইমেট অলিম্পিয়াড ২০২৫’। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনটি আয়োজন করে সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সিথ্রিইআর) এবং ব্রাইটার্স।
অলিম্পিয়াডে স্থানীয় সহযোগী হিসেবে ছিল পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা, গ্রিন এক্সপ্লোরার সোসাইটি ও আশার আলো। প্রতিযোগিতায় সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী চারটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় লিখিত পরীক্ষা, কুইজ এবং আলোচনা পর্বের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের জলবায়ু জ্ঞান, বিশ্লেষণ ক্ষমতা ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারার মূল্যায়ন করা হয়। প্রতিটি ক্যাটাগরি থেকে শীর্ষ ১০ জন বিজয়ী শিক্ষার্থী আগামীতে জাতীয় পর্যায়ের ক্লাইমেট অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম উজ্জ্বল, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ব্রাইটার্সের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সাইদুর রহমান সিয়াম এবং পরিচালক সোহানুর আমিন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা।
অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা তার বক্তব্যে বলেন, “উপকূল থেকে হাওর বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের তরুণদের জলবায়ু অভিযোজন ও সমাধানে যুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। রিজিওনাল পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতাই জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব গঠনের ভিত্তি তৈরি করবে।”
অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম উজ্জ্বল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের প্রত্যেককে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রত্যেকদিন আমাদের পরিবেশের জন্য সহায়ক কাজ যেমন করতে হবে; তেমনি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কাজ বর্জন করতে হবে। সাংবাদিক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার একটি হলো এই সিলেট অঞ্চল। সিলেটে ঘনঘন বন্যা বা হিটওয়েভে হাওরের ফসল নষ্ট হওয়া সবই জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল। এসব বিষয় আমাদের উপলব্ধি করতে হবে এবং ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে প্রয়োজন সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ।
সাইদুর রহমান সিয়াম বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন শুধু একটি পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বের প্রশ্ন। তরুণদের অংশগ্রহণই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার।”
সোহানুর আমিন বলেন, “এই অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে তরুণরা জলবায়ু সংকট নিয়ে গবেষণা, উদ্ভাবন ও নেতৃত্বে আরও আগ্রহী হবে। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে আমরা এমন উদ্যোগ ছড়িয়ে দিতে চাই।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, গবেষক, জলবায়ু কর্মী এবং পরিবেশ সংগঠনের প্রতিনিধিরা। দিনব্যাপী এই আয়োজনে শিক্ষার্থীরা শুধু প্রতিযোগিতায় অংশ নেননি, বরং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত নতুন ধারণা, সমাধান ও উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
সমাপনী পর্বে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় এবং আয়োজকরা ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে ক্লাইমেট অলিম্পিয়াড ২০২৬ আয়োজনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।




