বিধি বহির্ভূতভাবে বদলি হওয়ার অভিযোগ
তাহিরপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ২:৫০:২০ অপরাহ্ন
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে সংবাদদাতা : বিধি বহির্ভূতভাবে বদলি হয়ে নতুন বিদ্যালয়ে যোগদান করায় তাহিরপুরে ১৩ জন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর সুপারিশ করা হবে না এর ব্যাখ্যা আগামী ৩ নভেম্বরের মধ্যে জমা দিতেও বলা হয়েছে।
সেই সাথে যারা অবৈধভাবে বদলি নিয়ে নতুন বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন তাদের ১ নভেম্বর থেকে বিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা ও উপস্থিতি স্বাক্ষরের সুযোগ না দেওয়ার জন্য সংশি¬ষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দিয়েছেন উপজেলা প্রাাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তাছাড়া, তাদের আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে পূর্বের বিদ্যালয়ে ফেরত গিয়ে শিক্ষকদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্যও বলা হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের শিবরামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে দুইজন শিক্ষককে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বদলির আদেশ দেন। কিন্তু প্রতিস্থাপন হওয়ার আগেই , তারা অন্য স্কুলে চলে যান।
তিনজন শিক্ষকের ওই স্কুলের অপর শিক্ষিকা সবেধন নীলমনি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে চলে যাওয়ায় এখন স্কুলটিতে কোন শিক্ষক-ই নেই। বর্তমানে স্কুলটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। অন্য আরও পাঁচটি স্কুলে একইভাবে একজন ও দুইজন করে শিক্ষক প্রতিস্থাপন হবার আগেই অন্য স্কুলে বদলি হওয়া শিক্ষক চলে যাওয়ায় বিদ্যালয়গুলো এক শিক্ষকের স্কুলে পরিণত হয়েছে। এই স্কুলগুলো হচ্ছে- মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুর্লভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
নোটিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন-দুধের আউটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লাকী রানী বিশ্বাস, গোটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রীমা আক্তার, রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাওদা আক্তার, হলহলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোশাররফ হোসেন, গোপিনাথের নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রিয়াদ আহমদ, আমতৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আসমা আক্তার, লামাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসরিন আক্তার, পুরানলাউড়র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাথী রানী তালুকদার, বালিজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছা. নাজিরা খাতুন, পাটাবুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এইচ আর এম মাসুদ, কামারকান্দি সরকারি প্রাাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পপি আক্তার, লাউড়েরগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাছলিমা বেগম, পাড়াবেকই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছাম্মৎ জেসমিন। তাদের প্রত্যেককে বিভিন্ন সময়ে প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে বদলির আদেশ দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিস্থাপক বিদ্যালয়ে যোগদান না করার পরেও বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করেছেন এসব শিক্ষক। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বল্পতার কারণে লেখাপড়া চরম পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
পুরানলাউড়র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাথী রাণী তালুকদার বলেন, বিধি অনুযায়ী আমাদের বদলির আদেশ হয়েছিল। অফিস থেকে বদলির ডকুমেন্ট দেওয়ার পরই আমরা অন্য বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সোলেমান মিয়া বললেন, দায়িত্বশীল কাজ না করায় ১৩ জন শিক্ষককে নোটিশ দেয়া হয়েছে। শিবরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন কোন শিক্ষকই নেই। শিক্ষক না থাকায় আমরা বিব্রত অবস্থায় পড়েছি বলেও মন্তব্য করেন।




