নীতি প্রণয়নে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি’ সংলাপে খন্দকার মুক্তাদির
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তরুণদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে সমস্যা দূরীকরণে কাজ করবে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ৩:২১:৪৬ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : সিলেটে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার জালালাবাদ গ্যাস মিলনায়তনে ‘নীতি প্রণয়নে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, আমাদের দেশে দুর্নীতির প্রসার হয়েছে বিভিন্ন কারণে। একটা হলো আমরা জবাবদিহি দেশ থেকে অবলুপ্ত করে দিয়েছি, নির্বাচনী ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে এসেছি। এখন যারা সরকার গঠন করে, তাদের ভোটারের কাছে আসা লাগেনা দীর্ঘদিন ধরে। আগে দুর্নীতি ছিল না, তা বলব না। তবে দুর্নীতি দূর করতে সব থেকে জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করা জরুরি প্রয়োজন।
‘নীতি প্রণয়নে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি: সংলাপে খন্দকার মুক্তাদির’ শীর্ষক ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
খন্দকার আবদুল মুক্তাদির গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন। এবারও তিনি এ আসনে নির্বাচন করবেন। সভায় প্রশ্ন উত্তরকালে তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের পাশাপাশি তাঁদের চিন্তাভাবনা ও পরামর্শ কাজে লাগানো হবে। তাদের মতামতকেও রাষ্ট্র সমান গুরুত্ব দেবে।
মতবিনিময় সভায় তরুণ-তরুণীরা দেশ, রাষ্ট্র, সমাজ ও নির্বাচন নিয়ে তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি নানা ধরনের পরামর্শ ও সুপারিশ দেন। তাদের ভাবনাগুলো অভিনব ও গ্রহণযোগ্য জানিয়ে এ সময় খন্দকার আবদুল মুক্তাদির এসব বাস্তবায়নে বিএনপি কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন।
রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের নিয়ে তরুণদের মনোভাব সম্পর্কে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, তাঁদের অনেকেই মনে করেন, রাজনীতি ভালো জিনিস নয়। যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা সবাই চালাক ধরনের লোক, ধান্ধাবাজ লোক। তাঁদের কাজই হলো দুর্নীতি করা আর দেশকে ব্যবহার করে নিজের ক্ষমতা সুসংহত করা অথবা অর্থকড়ি আয় করা। এই ছিল সাধারণ মনোভাব। কিন্তু এই মনোভাব থেকে যদি আপনারা দূরে সরে থাকেন, তাহলে দেশের ভালোমন্দের ব্যাপারে আপনাদের মনোভাব, সচেতনতা বা পাবলিক প্রেসার যদি এর সঙ্গে যুক্ত না করেন, তাহলে এর ফলাফল কি কখনো চিন্তা করেছেন ?
খন্দকার মুক্তাদির বলেন, আমরা ধরে নিচ্ছি, যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা খারাপ লোক। এখন আপনারা যাঁরা ভালো লোক, তাঁরাও আসবেন না রাজনীতিতে। তাহলে পরিণামটা কী দাঁড়াল? আপনি এমন ব্যবস্থায় অ্যাগ্রি (একমত) করে ফেললেন যে আপনার থেকে কম মানের, কম গুণের, কম বুদ্ধির লোকেরা আপনাকে শাসন করবে। এর লাইসেন্স কিন্তু আপনারা দিয়ে দিলেন। দিয়ে দিলেন না? তো, এই লাইসেন্স না দেওয়ার মানে হচ্ছে, আপনি রাজনীতিতে অংশ নেবেন অথবা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আপনার একটা বলিষ্ঠ কণ্ঠ থাকবে, যেন আপনার মতামতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্র বাধ্যবাধকতায় থাকে।
সরকারের নীতি নির্ধারণে তরুণদের পরামর্শ কাজে লাগাতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, তারা তো বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে, অন্যান্য কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে সরকারকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রসেস আমাদের অনেকের জানা নেই। এসব জেনে তরুণদের সে ক্ষেত্রে পরামর্শ দিতে হবে।
খন্দকার আবদুল মুক্তাদির তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের পরিবহন সংকট থেকে শুরু করে সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ নানা বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন। ভবিষ্যতে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে তরুণদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে যাবতীয় সমস্যা দূর করতে আন্তরিকভাবে কাজ করবে বলেও তিনি জানান।




