ছাতক এসপিপিএমউচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে জটিলতা, জনমনে ক্ষোভ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০২৫, ১১:২৬:৫৮ অপরাহ্ন

ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা: ছাতকে সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস (এসপিপিএম) উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ।
৭ মাস আগে ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটি বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন ভবন তৈরিতে জটিলতা নিরসন এবং কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তরিকুল ইসলামের সহযোগিতা কামনা করেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় এলাকার কয়েকটি গ্রামের লোকসহ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, সাবেক জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষকবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাতক সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তুলসি চরণ দাস, জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিব্বির আহমেদ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর আলী বাদশা, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছালেক মিয়া, স্থানীয় ফরিদ মিয়া, আব্দুর রশীদ, রেদোয়ান আহমদ, মাসুম আহমেদ, মাহমুদ আলী, সিরাজ মিয়া, সৈয়দ আহমদ লেচু, আতাউর রহমান, আবুল হোসেন, ইউসুফ আলী, জহুরুল হক, আবুল খায়ের, শিক্ষক তমাল পোদ্দার, আহসান হাবীব, একরাম উদ্দিন, মাহমুদুল হাসান, মহসিন উদ্দিন।
গত বছরে বিদ্যালয়টি নতুন একটি একাডেমিক ভবন বরাদ্দ পায়। সে অনুযায়ী ভবনের স্থান নির্ধারণ ও সয়েল টেস্ট করা হয়। এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলীরা একাধিকবার নতুন ভবন নির্মাণের জায়গা পরিদর্শন করেন। ভবন নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা থাকলেও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ। যা এখনো শুরু করা হয়নি।
সূত্রমতে, নতুন ভবন নির্মাণ স্থানে রয়েছে ছোট-বড় কয়েকটি গাছ। আর এ গাছগুলো কর্তনের জন্যে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরীফ উদ্দিন বিদ্যালয়ের প্যাডে ইউএনও বরাবরে লিখিত আবেদন করেন। এতে গাছের সংখ্যা ২০ টি উল্লেখ করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ছাতক বিট-ফরেস্ট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন।
ছাতক বিট-ফরেষ্ট কর্মকর্তা (ফরেস্টার) মো. আইউব খান সরজমিন পরিদর্শন করে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জায়গায় ছোট বড় ১০ টি গাছ থাকার কথা উল্লেখ করে ২৭ ফেব্রুয়ারী ইউএনও বরাবর প্রতিবেদন দেন। যার বাজার মূল্য ৮ হাজার ৯শ’ ৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ওই সময় বিট কর্মকর্তা মো. আইউব খান বলেন, গাছগুলো জ্বালানি ছাড়া তেমন মূল্যবান নয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর আলী বাদশা বলেন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরিফ উদ্দিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে গাছের সংখ্যা বেশি লিখে জটিলতা সৃষ্টি করেছেন।
সাবেক পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন বলেন, বিদ্যালয়ের একটি একাডেমিক ভবন তৈরী হলে ছাত্রছাত্রীরা সুফল ভোগ করবে। পড়ালেখার সুবিধার্থে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ আবশ্যক।
বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছালেক মিয়া জানান, এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একটি ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বৃষ্টির সময় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে এবং শ্রেণি সংকট বিদ্যমান রয়েছে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ পর্যন্ত নতুন কোন একাডেমিক ভবন বরাদ্দ পায়নি। দীর্ঘদিন পর ভবন বরাদ্দ পাওয়া গেলেও জটিলতা কাটছে না।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম জানান, নতুন ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থানে গাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।