সিলেট মহানগর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নৃশংস তান্ডবে বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ২:১৪:৩২ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার নির্দেশে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে লাশের উপর নৃত্য করা হয়েছিল। সেদিন থেকে দেশে ফ্যাসিবাদের মহড়া শুরু হয়, পথ হারায় বাংলাদেশ। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ আবার পথের দিশা ফিরে পায়। আওয়ামী হায়েনার দল সেদিন শুধু পল্টন নয়, সিলেটের রাজনৈতিক ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছিল। তারা তৎকালীন সিলেট মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি নুরুল ইসলাম বাবুলকে শহীদ করতে নৃশংস হামলা চালিয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি আমাদের মাঝে আজো বেঁচে আছেন আলহামদুলিল্লাহ।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে জামায়াত কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে লগি-বৈঠার তান্ডবে শহীদ ও আহতদের স্মরণে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের নৃশংস হত্যাকান্ডের পর তারা ১/১১ এর ফখর-মঈন সরকারের সাথে আঁতাত করে ক্ষমতায় গিয়ে পিলখানা হত্যাকান্ড দিয়ে গণহত্যা শুরু করে। তারা ধারাবাহিকভাবে আমাদের শীর্ষ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে বিচারের নামে হত্যা করে। তারা আল্লামা সাঈদী (রহ.) রায় পরবর্তী সময়ে দেশে গণহত্যা চালায়। এরপর তারা শাপলা চত্বরের গণহত্যা এবং সর্বশেষ ২৪ এর জুলাই-আগস্টের গণহত্যা চালায়। হাজারো ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে চব্বিশের ৫ আগস্ট দীর্ঘ ১৭ বছর পর ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন নিশ্চিত হয়। ফ্যাসিবাদের দোসরদের কোনভাবে ছাড় দেয়া যাবেনা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাকারীদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে বিগত সকল হত্যকান্ডের বিচার নিশ্চিত করতে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
সমাবেশ শেষে নগরীতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে সমাপ্ত হয়। মিছিল-সমাবেশে সিলেট মহাগরীর সকল শাখার বিপুল সংখ্যক জনশক্তির পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন।
মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জাহেদুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান।
সমাবেশে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- ২০০৬ সালে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লগি-বৈঠার তান্ডবে গুরুতর আহত তৎকালীন সিলেট মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি ও বর্তমান সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. নুরুল ইসলাম বাবুল। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, সেদিনের তান্ডব আমি ভুলে যেতে চাই। বিষয়টি কারো সাথে শেয়ার করতে পারিনা। তারা সেদিন আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আল্লাহর মেহেরবাণীতে বেঁেচ আছি।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ইসলাম উদ্দিন, বায়তুল মাল সেক্রেটারি মুফতী আলী হায়দার, সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এডভোকেট ইয়াসীন খান, মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এডভোকেট জামিল আহমদ রাজু ও সিলেট মহানগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম সাজু।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন- ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের নৃশংসতা ভুলে থাকা যায়না, ভোলার নয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সেদিন আমাদের জোট সরকার ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু রহস্যজনক কারণে পুলিশ সেদিন কোন সহযোগিতা করেনি। এই রহস্য আজো অজানা রয়ে গেছে। এই দেশে আর কোন নৃশংসতা ও গণহত্যা জাতি দেখতে চায়না। শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে সংঘটিত সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে।




