বিশ্বকাপ ফুটবল: ইতিহাস গড়ে শেষ ষোলোতে মরক্কো গ্রুপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ৫:০০:৩৫ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : বেলজিয়ামকে হারিয়ে আকাশেই উড়ছিল মরক্কো। পরের ম্যাচে রুখে দিয়েছিল ক্রোয়েশিয়াকেও। এফ গ্রুপের শেষ ম্যাচে তাদের সামনে সমীকরণ ছিল কানাডাকে হারাতে পারলেই নকআউট। বৃহস্পতিবার কানাডাকে ২-১ গোলে হারিয়েও দিয়েছে আফ্রিকার দেশটি। ফলে ৩৬ বছর পর প্রথমবার নকআউটে উঠে ইতিহাস গড়েছে মরক্কো। তাও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ম্যাচের শুরু থেকে বলের দখল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে আক্রমণে উঠছিল মরক্কো। ম্যাচের মাত্র ৪ মিনিটের মাথায় কানাডার গোলকিপার মিলান বোরজার ভুলের সুযোগ নিয়ে মরক্কোকে এগিয়ে দেন চেলসি ফরোয়ার্ড হাকিম জিয়েখ। ৯ম মিনিটে মরক্কোর খেলোয়াড় ওউনাহিকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন কানাডিয়ান স্ট্রাইকার জুনিয়র হয়েলেট। ফ্রি কিক পায় মরক্কো। তবে ৩০ গজ দূর থেকে নেয়া সেই ফ্রি কিক থেকে বল ক্লিয়ার করে গোলের সুযোগ নষ্ট করে দেন কানাডার ডিফেন্ডার ভিটোরিয়া। ১৬ মিনিটের মাথায় সতীর্থর থ্রু বল থেকে আবারও বল পায়ে পেয়ে কানাডার গোলবার লক্ষ্য করে শট নেন হাকিম জিয়েখ। কিন্তু সেই শটে বল গোলপোস্টের বেশ দূর দিয়েই চলে যায়। অবশ্য দ্বিতীয় গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ম্যাচের ২৩ মিনিটের মাথায় আশরাফ হাকিমির ছোড়া থ্রো বল থেকে বল পায়ে পেয়ে দৌড়ে কানাডার অর্ধে ঢুকে যান মরক্কোর আরেক স্ট্রাইকার ইউসুফ এন নেসারি। সেখান থেকে চমৎকার এক শটে কানাডার গোলরক্ষক মিলান বোরজাকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান এই সেভিয়া ফরোয়ার্ড। প্রথমার্ধ শেষের ঠিক কয়েক মিনিট আগে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে বসেন মরক্কান ডিফেন্ডার নায়েফ আগুয়ার্ড। এবারের বিশ্বকাপের প্রথম আত্মঘাতী গোল এটি। ২-১ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় মরক্কো। বিরতির পর ৫৬ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ এসেছিল কানাডার সামনে। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি লারিন। ডান দিক থেকে নেওয়া ফ্রিকিক লারিনের সামনে দিয়ে গেলেও তিনি বল-পায়ে সংযোগ ঘটাতে পারেনি। ৭১ মিনিটে আটিবা হাচিনসনের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া হয় কানাডার। শেষ পর্যন্ত আর গোল পায়নি কোনও দলই। ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ চাড়ে মরক্কো। এ জয়ে গ্রুপের শীর্ষে থেকে নকআউটে গেলো আফ্রিকার দেশটি।
গ্রুপ রানার্সআপ হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে ক্রোয়েশিয়া
দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার জন্য জয় ছাড়া কোনও পথ খোলা ছিল না বেলজিয়ামের সামনে। অন্যদিকে ড্র করলেই চলতো ক্রোয়োশিয়ার। এমন সমীকরণকে মাথায় নিয়ে দুই দল একে অপরের বিপক্ষে খেলতে নামে কাতারের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে। তবে দিনটি বেলজিয়ামের ছিল না। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারলেন না দলটির সর্বোচ্চ গোলদাতা রোমেলু লুকাকু। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফলও হলো গোলশূন্য ড্র। ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল বেলজিয়াম।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রোমেলু লুকাকুকে মাঠে নামায় রেড ডেভিলরা। ৫১ মিনিটে গোলের সুযোগ পায় ডি ব্রুইন। তার বুলেট গতির শট গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৫৪ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণ থেকে ব্রজোভিচের শট রুখে দেন কর্তোয়া। ৬০ মিনিটে প্রায় গোলের দেখায় পেয়ে গিয়েছিল বেলজিয়াম কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলবার। লুকাকুর ডান পায়ের শট গোলরক্ষকে পরাস্ত করলেও গোলবারে লেগে বাইরে চলে যায়। ৬৪ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় লুকাকু। এবার তার হেড চলে যায় গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে। ম্যাচের শেষ দিকে ৮৭ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন লুকাকু। এবারও তার শট দেখা পায়নি গোলের। ৯০ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি মিস করেন লুকাকু। থোরান হ্যাজাড্রের বাড়ানো বলে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়েও তা গোল মুখে ঢুকাতে পারেননি তিনি। মূলত লুকাকুর এতগুলো গোল মিসেই কপাল পুড়ে বেলজিয়ামের। খালি হাতেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় বেলজিয়ামকে। অন্যদিকে ড্র করে গ্রুপের রানার্সআপ হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে ক্রোয়েশিয়া।