শফিক চৌধুরীর নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান
‘সিলেটের সামগ্রিক উন্নয়নে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দৃষ্টি’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ মার্চ ২০২৪, ১:৪৫:৫৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেছেন, সিলেটের মাটি শেখ হাসিনার ঘাঁটি। বিগত নির্বাচনে আপনারা নৌকায় ভোট দেওয়ায় বঙ্গবন্ধুকন্যা এর প্রতিদান হিসেবে শফিকুর রহমান চৌধুরীকে প্রতিমন্ত্রী করেছেন। সিলেটের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দৃষ্টি রয়েছে।
গতকাল শনিবার বেলা ৩ টায় সিলেটের ঐতিহাসিক সারদা হলের সম্মুখে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ায় তাঁর সম্মানে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আশফাক আহমদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মোঃ নাসির উদ্দিন খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আরো বলেন, একসময় সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন সিলেটের মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোট দেবে না। কিন্তু সেদিন সিলেটের মানুষ বদর উদ্দিন কামরানকে বিজয়ী করে প্রমাণ করেছিল সিলেটের মাটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আপনারা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন।
মন্ত্রী আব্দুর রহমান আরো বলেন, যারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে ছিল, নির্বাচন হবে না বলেছিল, হুমকি দিয়েছিল, ভয়ভীতি দেখিয়েছিল, তাদের মুখের ওপর শেখ হাসিনা বলেছিলেন বাংলার মাটি আমার পায়ের নিচে আছে, মানুষ আমার সাথে আছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা সেটা ভয় পায় না। নির্বাচন হয়েছে। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়েছেন তিনি। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই শফিক, আনোয়ার, হাবিব রনজিতরা এখানে এমপি হয়েছেন।
সিলেটের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাথে ৭ বছর কাজ করার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘২০০৪ সালে যখন ভয়াবহ সংকট চলছিল, যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঘর থেকে তুলে নিয়ে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। সেই সময় সিলেটে সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছিল। তখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে ছিল, আওয়ামী লীগের ৩৬ হাজার নেতাকর্মী তাদের সংসার থেকে হারিয়েছিল। তখন লক্ষ্মীপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতার এক চোখ উপড়ে ফেলে তার বুকের উপর দাঁড়িয়ে বলা হয়েছিল, আর জয় বাংলা বলবি কি-না, বল? যদি জয় বাংলা বলিস তাহলে তর আরেক চক্ষু উপড়ে ফেলবো। তখন সে বলেছিল আমার আরেক চক্ষু কেন আবার জীবনও যদি চলে যায়, তাহলেও আমি জয় বাংলা ছাড়বো না। এই ধ্বনি আমি দিয়েই যাবো।’
সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমাকে মন্ত্রীত্ব দেয়ার বিষয়টি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ, সিলেটবাসী ও এ বিভাগের কৃতিত্ব। আমি শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই। আপনাদের ভাই-বন্ধু হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই। তিনি সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় সিলেটের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাউর রহমান, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রনজিত সরকার এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব এমপি, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
সৈয়দা জেবুন্নেছা হক বলেন, সিলেটের মানুষ বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে। তিনি বলেন, দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলেও বিএনপি-জামায়াত তা নস্যাৎ করতে চায়। তিনি দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য নুরুল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি এডভোকেট মোঃ নিজাম উদ্দিন, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, এডভোকেট শাহ মোঃ মোসাহিদ আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সুব্রত পুরকায়স্থ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল, মোহাম্মদ আলী দুলাল ও কবীর উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ শমসের জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মাহফুজুর রহমান ও সাইফুল আলম রুহেল, সিলেট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নিজাম উদ্দিন, বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক আহমদ, ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান, বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান মফুর, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনহার মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজদ, গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া হেলাল, কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ কামাল আহমদ, বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত টুটুল, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি এজাজুল হক এজাজ, জেলা মহিলা লীগের সভাপতি এডভোকেট সালমা সুলতানা, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ শামসুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফছর আজিজ, সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন আহমদ কয়েছ, জেলা তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন দেবনাথ, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল কান্তি দাস।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন সম্পাদক এডভোকেট আজমল আলী, কৃষি ও সমবায় বিষয় সম্পাদক হাজী ফারুক আহমদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো: মবশ্বির আলী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সৈয়দ এপতার হোসেন পিয়ার, দফতর সম্পাদক আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজী রইছ আলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বুরহান উদ্দিন আহমদ, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শামসুল আলম সেলিম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা: মোহাম্মদ সাকির আহমদ (শাহীন), উপ-দপ্তর সম্পাদক মো: মজির উদ্দিন, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মতিউর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদাল মিয়া, এডভোকেট বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, মোঃ আব্দুল বারী, মোঃ জাকির হোসেন, এডভোকেট আফসর আহমদ, এডভোকেট ফখরুল ইসলাম, গোলাপ মিয়া, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম রশিদ চৌধুরী, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমেদ, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি শাহ মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, জেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাকীম দিনা আক্তার প্রমুখ।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এমাদ উদ্দিন মানিক, গীতা পাঠ করেন জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল কান্তি দাস।
পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী শাহনাজ বেলী, আশিক প্রমুখ।