ঈদযাত্রায় সিলেটে এবারও নেই কোন ‘স্পেশাল ট্রেন’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুন ২০২৪, ২:০৭:০৭ অপরাহ্ন

এনামুল হক রেনু :
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলাচল শুরু করবে। ঘরমুখো মানুষের সুবিধার্থে রেল বিভাগ এবার ১০ জোড়া ‘স্পেশাল ট্রেন’ চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও সিলেটের ভাগে পড়েনি একটিও। গত বছর ঈদ-উল-ফিতরে সিলেট-চাঁদপুর রুটে প্রথমবারের মতো একজোড়া ‘স্পেশাল ট্রেন’ দেয়া হয় কিন্তু এরপর থেকে এ রুটেও যাত্রীরা উপেক্ষিত। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিলেটের সাধারণ যাত্রীরা।
জানা গেছে, প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে লক্ষাধিক মানুষ সিলেট ছেড়ে যান। চাকুরিজীবী, শিক্ষার্থী ও নানা পেশায় জড়িত বিভিন্ন জেলার এসব মানুষ সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করেন। ঘরমুখো এসব মানুষ যানজট এড়ানো, সাশ্রয় ও আরামদায়ক ভ্রমণের লক্ষ্যে বাসের পরিবর্তে রেলপথকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
এদিকে, সিলেট রেলস্টেশনে কালোবাজারি চক্র তৎপর রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক যাত্রী। এদের মৌসুমি বাণিজ্যের কারণে অনেকে অনলাইনে টিকেট পাননি বলে জানিয়েছেন। এছাড়া এসি টিকেট পাননি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। তাদের দাবি, এসি টিকেটের বেশিরভাগই চলে গেছে বিশেষ কোটায়। ফলে, তাদের খুশি থাকতে হয়েছে সাধারণ টিকেট শোভন চেয়ারেই।
যাত্রীরা জানান, রেল কর্তৃপক্ষ সিলেট রুটে আন্তঃনগর ট্রেনের কোচ অনেক আগেই কমিয়ে দেয়ায় এবার ঈদে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়বে। একটি স্পেশাল ট্রেন এবং উদয়ন, উপবন ও কালনী এক্সপ্রেসে এসিসহ প্রতিটি ট্রেনে দু’টি করে বগি বরাদ্দ দিলে দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হতো।
সিলেট থেকে ঢাকায় নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াতকারী সাহেদ আহমেদ বলেন, প্রতি বছরই ঈদের সময় বিশেষ ট্রেনের জন্য সিলেটবাসী সোচ্চার হয়। কিন্তু তাও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নজর কাড়ে না।
সিলেট নগরীর রায়নগরে বসবাসকারী চাকরিজীবী মুজিবুর রহমান বলেন, তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে। প্রতি বছর ঈদে বাড়ি যেতে ট্রেনের জন্য ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেক কষ্ট করে গ্রামের বাড়িতে যেতে হয়। সিলেটবাসী অন্য দাবি থেকে বঞ্চিত না হলেও বিশেষ ট্রেনের দাবি থেকে প্রতি বছরই বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা হতাশ হয়।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, সিলেটে টিকেট প্রত্যাশীদের তেমন চাপ নেই। কাউন্টারগুলো প্রায় ফাঁকাই থাকে। সিলেটের জন্য ‘আগাম টিকেটের প্যাকেজ’ না থাকলেও অনলাইনে সব টিকেট বিক্রি ইতোমধ্যে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনও পর্যাপ্ত টিকেট রয়ে গেছে বলে দাবি করছে তারা।
সিলেট রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার নুরুল ইসলাম জানান, স্পেশাল ট্রেন এবং বগি সংযোজনের চাহিদার কথা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রেখেছি। এসব বরাদ্দের বিষয়ে আমাদের কোন হাত নেই।
তিনি বলেন, ঈদের অগ্রিম টিকেট বলা হলেও সিলেটে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ কোন প্যাকেজ দেয়া হয়নি। মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী সব টিকেট অনলাইনে চলে যাওয়ায় কাউন্টারে তেমন চাপ নেই। এবার ২ জুন থেকে অনলাইনে টিকেট বিক্রি শুরু হয়ে ৬ জুন পর্যন্ত চলে। তবে, ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকেট সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, বুধবার থেকে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল (১, ২, ৩ ও ৪) চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম; দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল (৫ ও ৬) ঢাকা- দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা; ময়মনসিংহ ঈদ স্পেশাল (৭ ও ৮) চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম; কক্সবাজার ঈদ স্পেশাল (৮ ও ৯) চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে চালু হয়ে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ও ঈদের পরে ৭ দিন চলাচল করবে।
এছাড়া পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল (১৫ ও ১৬) জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে আগামী ১৩-১৫ জুন (৩ দিন) ও ঈদের পরে ২১-২৩ জুন (৩ দিন) চলাচল করবে।
অন্যদিকে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল (১১ ও ১২) ভৈরব বাজার-কিশোরগঞ্জ- ভৈরব বাজার; শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল (১৩ ও ১৪) ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ; গোর-এ-শহীদ ঈদ স্পেশাল (১৭ ও ১৮) পার্বতীপুর-দিনাজপুর-পার্বতীপুর; গোর-এ-শহীদ ঈদ স্পেশাল (১৯ ও ২০) ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও রুটে শুধু ঈদের দিন চলাচল করবে।