সিলেটে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষার্থীরা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ আগস্ট ২০২৪, ২:০০:৫৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট নগরীর সড়কগুলোতে গাড়ি চলাচল করছে যথারীতি। শুধু চলাচল নয়, শৃঙ্খলাও মানছেন সবাই। তবে ট্রাফিক পুলিশ নেই। শিক্ষার্থীসহ তরুণরা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজটি করছেন। গত ৬ আগস্ট থেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সবগুলো পয়েন্টে তারা এই দায়িত্ব পালন করছেন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে মির্জাজাঙ্গাল, লামাবাজার, রিকাবীবাজার কবি নজরুল চত্বর, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজারে দেখা গেছে তরুণ-তরুণীরা লাঠিহাতে ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতিতে শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী, মাদরাসা এবং স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও পেশাজীবী তরুণ-তরুণীরা সেই দায়িত্ব পালনে সড়কে রয়েছেন। সেই দলে আছেন স্কাউটের শিক্ষার্থীরাও।
অনেকের কপালে শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। লাঠির পাশাপাশি মুখে আছে বাঁশি। নজরুল চত্বর ও পুলিশলাইন সড়কে দেখা গেছে, একদল সড়কে শৃঙ্খলার কাজে ব্যস্ত, অন্যদলে তরুণ-তরুণীরা রংতুলি নিয়ে ব্যস্ত।
তারা সুন্দর স্বপ্ন, প্রত্যাশাগুলো দেয়ালে লিখছেন। আপন মনে লিখছেন- কেমন বাংলাদেশ চাইছেন, কেমন বাংলাদেশ হবে। তাদের সেই কাজে অনুপ্রেরণা যুগাচ্ছেন সিলেটের বেশকিছু মানুষ। অনেকেই তাদের মধ্যে স্বেচ্ছায় খাবার বিলি করছেন। দেখা গেছে, ‘এবিএম ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংস্থা প্রায় শতাধিক তরুণ-তরুণীর মধ্যে আপেল, জুস হাতে হাতে তুলে দিচ্ছেন। ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে এই কাজটি করছি। মূলত দেশ নিয়ে তাদের সুন্দর ভাবনা দেখে আমরা অভিভূত হচ্ছি। আমাদের দায়িত্ব থেকে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করা উচিত।
এবিএম ফাউন্ডেশনের মতো আরো অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে তাদের হাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন। নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তরুণ-তরুণীরা যেভাবে সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন, তেমনি কিছু মানুষ তাদের ভালো কাজকে অনুপ্রাণিত করছেন। কথা হয় মিরের ময়দান সড়কের পুলিশ লাইন পয়েন্টস্থ ফার্মিস গার্ডেন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট এর কর্ণধার ফার্মিস আক্তার এর সাথে। তিনি বলেন, ‘তরুণরা দেয়ালে সুন্দর স্বপ্নের কথা তুলে ধরছে। তারা সম্ভাবনার কথা বলছে। আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ভালো কাজে একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো উচিত।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্রদের তুমূল আন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। দেশত্যাগের পর আন্দোলনকারীরা পুলিশের প্রতি ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারপর দায়িত্ব থেকে আড়াল হন পুলিশ সদস্যরা। পুলিশের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশকেও দেখা যাচ্ছে না তাদের দায়িত্বের জায়গায়। এ অবস্থায় তরুণরাই হাল ধরেন সড়কের, শৃঙ্খলার।
তবে শুধু সড়ক নয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজেও তারা অবদান রাখছেন। রিকাবীবাজারে কয়েকজন তরুণের সাথে কথা হয়। সাইদা নামে এক তরুণী বলেন, ছয়ত্রিশদিন আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা যে বিজয় এনেছেন, তা শিক্ষার্থীদেরই ধরে রাখতে হবে।
দ্বীপ নামে এক তরুণ বলেন, আমাদের কাজ দেখে সব পেশার মানুষ সন্তুষ্ট। চালকরাও অসন্তুষ্ট নন। যারা হেলমেট ব্যবহার না করে গাড়ি চালাচ্ছেন, তাদের কাছে আমরা হেলমেট ব্যবহারের গুরুত্বটি তুলে ধরছি।