সিলেটে ‘শহীদী মার্চ’ কর্মসূচি পালিত
গণহত্যার বিচারসহ ৫ দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬:৪১ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে রাজধানীতে পালিত হয়েছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির এক মাস পূর্তি উপলক্ষে শহীদ ও আহতদের স্মরণে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ছাত্রদের ডাকে এই মার্চে অংশ নিতে রাজপথে নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। মার্চ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
দাবিগুলো হলো- গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, শহীদ পরিবারকে আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে হবে, প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসরদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে, গণভবনকে জুলাই স্মৃতি যাদুঘর ঘোষণা করতে হবে, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করতে হবে।
গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষার্থীর সঙ্গে এই মার্চে যোগ দেন সর্বস্তরের মানুষ। মুখে স্লোগান, হাতে লাল সবুজের পতাকা। কেউ কেউ মাথায় পতাকা বেঁধেছেন। অনেক শিশুরাও স্কুলের পোশাক পরে এতে যোগ দেয়। মার্চ চলাকালে আশপাশের দোকানি, পথিকরা, অফিসের লোকজন হাত নাড়িয়ে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। মার্চটি নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, কলাবাগান, মিরপুর রোড ধরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে কথা বলেন সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সফল হোক সফল হোক, শহীদী মার্চ সফল হোক’, ‘শহীদদের কারণে, ভয় করি না মরণে’, আবু সাঈদ/শহীদের রক্ত, বৃথা যেত দেব না’, ‘আজকের এই দিনে আবু সাঈদ/শহীদদের মনে পড়ে’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও গতকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে ‘শহীদী মার্চ’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে তোপের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্ণ হয় গতকাল। গত মাসের এইদিনে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নেন।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল নগরীর চৌহাট্টা এলাকা থেকে শহীদী মার্চের যাত্রা শুরু করেন ছাত্র-জনতা। এতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সিলেটের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা, স্কুল শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ অংশ নেন। মার্চটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বন্দরবাজার এলাকায় গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
এসময় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ ‘সফল হোক সফল হোক, শহীদী মার্চ সফল হোক’, ‘শহীদদের কারণে, ভয় করি না মরণে’, আবু সাঈদ/শহীদের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘আজকের এই দিনে আবু সাঈদ/শহীদদের মনে পড়ে’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকেন।
শহীদী মার্চে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী জানান, ‘বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। আজ থেকে ঠিক এক মাস আগে এই দেশে থেকে ‘স্বৈরাচার’ শেখ হাসিনার পতনে স্বাধীনতা পেয়েছিলাম আমরা। এই স্বাধীনতার বিনিময়ে আমাদের হাজারো ছাত্র-জনতাকে জীবন দিতে হয়েছিল। হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আহত হন। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। অনেকে এখনো হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা সেসব শহীদ ও আহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দেওয়ার জন্য। এই দেশে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে কখনও ক্ষমা করা যাবে না। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’