হযরত শাহজালাল রহ. তাওহিদি কাফেলার মানববন্ধনে বক্তারা
মাজারে মাদকের আসর ও শরিয়তবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫:২৭:৫৩ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : মাজারকেন্দ্রিক পাপাচার, অশ্লীলতা ও মাদকের আসর বন্ধের দাবিতে সিলেটে মানবন্ধন করেছে হযরত শাহজালাল রহ. তাওহিদি কাফেলা। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বাদ জুমা নগরীর কোর্ট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে হজরত শাহজালাল-শাহপরান (রাহ.)-সহ দেশের ওলি-আউলিয়ার মাজারে সমাজ ও শরিয়তবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ওলি-আউলিয়ারা সমাজে পাপাচার ও অশ্লীলতা বন্ধে আজীবন সাধনা করেছেন। মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ গঠন ও মানবিক বিকাশে সংগ্রাম করেছেন। মাদকের ভয়ালগ্রাস থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে সর্বস্ব বিলিয়েছেন। কিন্তু কিছু বিপথগামী ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর কারণে মাজারগুলো আজ মদ-গাঁজা ও পাপাচারের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। মাজারকে টাকা আয়ের মাধ্যমে পরিণত করা হয়েছে। অবিলম্বে এসব বন্ধ করে মাজারে আসা গণমানুষের দানকে জনকল্যাণমূলক খাতে ব্যয় করার উদ্যোগ নিতে হবে।
শাহজালাল রহ. তাওহিদি কাফেলার আহ্বায়ক ও বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুশতাক আহমদ খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কাফেলার উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা ক্বারি সিরাজুল ইসলাম, হযরত শাহজালাল রাহ. দরগাহ মসজিদের খতিব হাফিজ মাওলানা আসজাদ আহমদ, মাওলানা হাফিজ সৈয়দ শামীম আহমদ, সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, সদস্য সচিব মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাব।
মানববন্ধনে সাবেক মেয়ার আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আদর্শ ও সুস্থ সমাজ গঠনে মাদক পরিহারের বিকল্প নেই। আমাদের দেশে ওলি-আউলিয়ারা এসেছিলেন মানুষকে পরিশুদ্ধ করতে। এখন তাদের মাজারকে মদ-গাঁজার আসরে পরিণত করা হয়েছে। প্রশাসনের চোখের সামানে এভাবে প্রকাশ্য মাদকের ব্যবহার চলতে দেওয়া যায় না। সিলেটের বিভাগীয় প্রশাসক, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মাজারে চলা মদ-গাঁজার আসর ও পাপাচার বন্ধে আপনারা কবে পদক্ষেপ নিবেন- সেটা সিলেটবাসী ও তৌহিদি জনতা দেখতে চায়।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মুশতাক আহমদ খান বলেন, ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগের কেন্দ্র ওলি-আউলিয়ার মাজার। আমরা মাজার ভাঙার পক্ষে নই, মাজারকেন্দ্রিক সমাজ ও শরিয়তবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করতে চাই। আলেমদের কাজ পাপাচার চিহ্নিত করা দেওয়া, আমরা সেই দায়িত্ব পালন করছি। প্রশাসনের কাজ এসব বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। রাষ্ট্রে যেভাবে সংস্কারের উদ্যোগ চলছে, আলেম-উলামার নেতৃত্বে কমিটি করে মাজারের পবিত্রতা রক্ষায় তেমনি সংস্কার কাজ শুরুর উদ্যোগ নিতে হবে।
সদস্য সচিবের বক্তব্যে মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ বলেন, শিরক-বিদাত ও মাদকের আসর বন্ধ করতে হজরত শাহজালাল-শাহপরান রাহ. মাজার কর্তৃপক্ষ সচেতনতামূলক নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। ওলি-আউলিয়ার মাজারকে মানুষের পরিশুদ্ধির জায়গায় পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষকে মাদক ও পাপাচার থেকে ফেরানোর পাশাপাশি তাদের ঈমানকেও রক্ষা করতে হবে।
যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ খাসদবিরি, মাওলানা শাব্বির আহমদ ও সহ-সদস্য সচিব মাওলানা বদরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শাহজালাল জামেয়া পাঠানটুলা কামিল মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা ফায়জুল্লাহ বাহার, রাজনীতিবিদ মাওলানা আব্দুল মালেক চৌধুরী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মুখলিসুর রহমান, সাংবাদিক হাফিজ মাওলানা ফায়যুর রাহমান, সিয়ানাহ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মুফতি জিয়াউর রহমান, ছাত্রনেতা মাওলানা আহমাদুল হক উমামা, মাওলানা আরিফুল হক ইদ্রিস, লিটন আহমদ জুম্মান, আখতার আহমদ প্রমুখ।