অবাধে বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে ধলাই সেতু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ৬:০৯:০৪ অপরাহ্ন

আবিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ থেকে : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ধলাই সেতুর নিচ থেকে বালু-পাথর উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রতিদিন শতাধিক বারকি নৌকায় করে নদী থেকে বালু-পাথর উত্তোলন করছেন কারবারিরা। সেতুর নিচ এবং ৫০ থেকে ২০০ গজের মধ্যে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সেতুটি।
সরেজমিন ধলাই সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর দুই পাশে এবং নিচে অবাধে বালু ও পাথর উত্তোলন চলছে। বারকি নৌকায় করে বালু ও পাথর তুলে নদীর পাড়ে স্তূপ করে রাখা হয়। পরে ছোট ছোট ট্রলি এবং ট্রাক্টরে করে নেওয়া হয় বিভিন্ন ক্রাশিং মিলে।
স্থানীয়রা জানান, গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে এই অবৈধ কারবার চলছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা দায়সারা গোছের দুয়েকটি অভিযান দিয়েছেন। ফলে কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে গেছে। নির্বিঘেœ বালু-পাথর উত্তোলন চলছেই। ফলে সেতুটি ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবিদা সুলতানা বলেন, ধলাই নদী থেকে নির্বিচারে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। কিছুতেই বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। শিগগিরই জেলা প্রশাসন থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে দিবে।
এ বিষয়ে সিলেটের সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, সেতু থেকে ন্যূনতম আধকিলোমিটার দূর থেকে বালু তুলতে হয়। অন্যথায় সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে এ সেতুর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সওজ সূত্র জানায়, ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির পাশের ধলাই নদের উভয় তীরের মানুষের যাতায়াতের জন্য ২০০৩ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১২ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রায় ৪৩৪ দশমিক ৩৫ মিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের সেতুটি সিলেট বিভাগের দ্বিতীয় দীর্ঘতম। টানা তিন বছর কাজ চলার পর সেতুটি ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সেতুর স্থায়িত্ব ধরা হয় ৭৫ বছর। ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সেতুর উদ্বোধন করেন। সেতু নির্মিত হওয়ায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর, উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের ৩০ সহস্রাধিক মানুষ সরাসরি সড়ক যোগাযোগের আওতায় আসে৷ পাশাপাশি দেশের সর্ববৃহৎ ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর পরিবহন সহজতর হয়।