বেলার মতবিনিময় সভায় বক্তারা
গবেষণার মাধ্যমে অবৈধ পাথর উত্তোলনে ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণ করা প্রয়োজন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩:১৩:৫১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: ‘সিলেটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সিলেটের টিলা, নদী এমনকি পর্যটনস্থল থেকে পাথর উত্তোলন বৃহৎ আকারে বেড়েছে। যান্ত্রিকভাবে এসব পাথর উত্তোলনের কারণে পরিবেশগত বিষয়ে কোনো চিন্তা করছেন না অসাধু ব্যবসায়ীরা। পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে যা ভূপ্রকৃতিকে বড় ঝুঁকিতে ফেলবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের তৎপরতা নেই। এসব বিষয় নিয়ে একডেমিক কিংবা সরকারি জায়গা থেকে বড় কোন গবেষণা করা হচ্ছে না। গবেষণার মাধ্যমে অবৈধ পাথর উত্তোলনে আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির দিকটি নিরূপণ করা প্রয়োজন। এজন্য বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে গবেষণায় জোর দিতে হবে।
গতকাল নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার উদ্যোগে সাংবাদিকদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সিলেটের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দা শিরিন আক্তারের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেলা’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আখতার। অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. মিছবাহ উদ্দিন, পেট্রলিয়াম ও খনি প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, বর্তমান সভাপতি ইকরামুল কবীর ও বেলার নেটওয়ার্ক সদস্য ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম, ফয়সল আহমদ বাবলু, কাউসার চৌধুরী, দেবাশীষ দেবু, নূর আহমদ, প্রত্যুষ তালুকদার, সুজাত প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মো. মিছবাহ উদ্দিন বলেন, ‘১৯৯৩ সালে যখন জাফলংয়ে গিয়েছিলাম তখন সেখানে পরিববেশগত একটি বৈচিত্র্য ছিল , কিন্তু তা এখন আর নেই। সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের বিষয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তা তখনই সম্ভব যখন সেখানকার পরিবেশ পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে। পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সরকারকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। পূর্বের অবস্থায় ফিরলে তখন সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করা যেতে পারে। পাশাপাশি পাথর কোয়ারিগুলো থেকে যন্ত্র ব্যবহার করে (ড্রেজারমেশিন) অবৈধভাবে লাগামহীন পাথর উত্তোলনে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে-তা গবেষণা করা প্রয়োজন।’
অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে কয়েকটি সুবিধা আছে। এজন্য অনেক জনবলের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। তবে এর পাশ কাটিয়ে ব্যবসায়ী মালিকরা ভিন্ন পথ অবলম্বন করেন। তারা যন্ত্রের ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করছেন। তারা যুক্তি দেন যে পাথর উত্তোলন না করলে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়। কিন্তু বাস্তবে এটি চরম অজুহাত। জাফলংয়ের নদীতে পাথর জমে থাকার কারণে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন খুব দুর্বল। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। এ ব্যপারে মানুষের মানবিক বোধ জাগ্রত করতে হবে। প্রশাসনকে জবাবদিহীতার আওতায় আনতে হবে।’