পাগলা-বীরগাঁও সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেই, অনিশ্চয়তায় ১০ গ্রামের মানুষ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২৫, ৯:৫৭:৪৫ অপরাহ্ন

শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পাগলা- বীরগাঁও সড়ক গেল বছরের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ধসে যায় ব্লক। অন্তত ২০ টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়ে মূল সড়ক সংকীর্ণ হয়ে গেছে। চলতি বর্ষার আগে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত না করলে হাওরে ঢেউয়ের আঘাতে অবশিষ্ট সড়ক বিলীন হওয়ার শঙ্কায় এলাকাবাসী। বর্ষার আগে জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কার করে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজার থেকে পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের খালপাড় সেতু পর্যন্ত সড়ক পথের দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার। খালপাড় থেকে বীরগাঁও বাজারের দূরত্ব আরো আড়াই কিলোমিটার হবে। এ সড়ক দিয়েই ইউনিয়নের মানুষসহ পার্শ্ববর্তী পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের মানুষ পাগলাবাজার হয়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সাথে যোগাযোগ করে থাকেন। বীরগাঁও থেকে পাগলা বাজারে প্রতিদিন শতাধিক সিএনজি চালিত অটোরিকশা যাত্রী আনা-নেওয়া করে থাকে। দুই ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি।
সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পাগলা-বীরগাঁও সড়কের ব্রাহ্মণগাঁও অংশে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের প্রাক্তন ইউপি সদস্য নূরুল হকের বাড়ির সামনে থেকে ভাঙনের শুরু হয়। ছোট ছোট ভাঙা অংশে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের অংশ শেষ হলেও পূর্ব বীরগাঁওয়ের বড়ভাঙা নামক স্থান থেকে শুরু হয় রাস্তাটির বড় বড় ভাঙা অংশ।
বিশেষ করে আমান আলীর বাড়ির সামনের ভাঙা অংশ বেশ বড়। ছোট বড় প্রায় ২০টি ভাঙন আছে এ সড়কে। অন্তত ৮টি স্থানে দেখা গেছে অনেক বড় ধরনের ভাঙন। কোনো কোনো স্থানে অর্ধেকের বেশি সড়ক ভেঙে গিয়েছে। যে হারে রাস্তাটি ভাঙতে শুরু করেছে তাতে বীরগাঁওয়ের সাথে পাগলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে একটি আবেদনও করেছেন পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নবাসী।
বীরগাঁও গ্রামে সমাজকর্মী বাবরুল নাহিদ বলেন, আমাদের এলাকার অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। আমাদের কোনো বিকল্প সড়কপথ নেই। সড়কের অবস্থা নাজুক। যদি বর্ষার আগে সড়কটি মেরামত না করা হয় তাহলে সড়কটি বিলীন হয়ে যাবে। তখন এলাকাবাসী মহা দুর্ভোগে পড়বেন।
পরিবহন শ্রমিক নেতা ও নিয়মিত চালক ছৈয়দুর রহমান বলেন, আমরা এ সড়কে নিয়মিত গাড়ি চালাই। প্রতিদিন অন্তত দেড়শ’ সিএনজি এই সড়কে চলে। রাস্তাটির ভাঙা অংশে গেলে ভয় করে। অনেকাংশে ভাঙন রাস্তার অর্ধেক থেকেও বেশি।
সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে জেলার সব উপজেলায় চাহিদামতো কাজ করতে পারছেন না বলে আক্ষেপ করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই চার পাঁচশো কোটি টাকা বরাদ্দ হোক। সব উপজেলায় গত বাজেটে মাত্র ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। অনেক সড়কের সংস্কারের জন্য আবেদন পাঠিয়েছি। তবে পাগলা-বীরগাঁও সড়কটি সে তালিকায় আপাতত নেই। আগামী বর্ষার আগে বরাদ্দ পাবো কি না তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় আছি।