সিলেটে ঈদ বাজারে ক্রেতাদের ভিড়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুন ২০২৫, ৪:০১:১৮ অপরাহ্ন

ইউনুছ চৌধুরী :
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সিলেটের বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বাড়লেও এখনো কেনাবেচা জমে উঠেনি। জামা-কাপড় ও জুতা, কসমেটিকস বাজারে এখনো স্বাভাবিক বিক্রি চলছে। ঈদ কেন্দ্রিক ক্রয় বিক্রয় তেমন শুরু হয়নি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। শেষ মুহূর্তে বাজার জমে উঠার অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছেন তারা। পবিত্র ঈদুল আজহায় সাধারণত কোরবানীর পশুর চাহিদা থাকে। কোরবানীর পশু ক্রয় বিক্রয় এই ঈদের প্রধান আকর্ষণ বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
গতকাল বুধবার সিলেটের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদ বাজারে মানুষের ভিড় বেড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকে বেরিয়েছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। বন্ধু সহপাঠিদের নিয়ে অনেকে ঘুরে ঘুরে দেখছেন, খুঁজে নিচ্ছেন পছন্দের পণ্য। দোকানগুলো আলাদা আলকসজ্জা না করলেও অনেক শপিং মল-মার্কেট ও ফ্যাশন হাউসে ঈদ উপলক্ষে আলোক বা সাজসজ্জা করা হয়েছে। বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়লেও কেনাকাটা সেভাবে শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ফ্যাশন হাউসগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। এছাড়া, কাপড়ের তুলনায় জুতার দোকানে ভিড় ছিল বেশি।
এদিকে, পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই। জামা ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায়, পাঞ্জাবি ১০০০ থেকে ২২০০ টাকায়, জুতা ৮০০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফ্যাশন হাউসগুলো নির্ধারিত দামে তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছে। এছাড়া, ফুটপাতে হকাররা তাদের পণ্য সাজিয়ে বসেছেন। হ্যান্ড মাইকে ছোটদের পণ্য ৫০ টাকা, কেউ বা বড়দের শার্ট প্যান্ট, পাঞ্চাবি অথবা জুতা, স্যান্ডল ১০০, ১৫০, ২০০ অথবা ৫০০ টাকায় ক্রয়ের সুবর্ন সুযোগ প্রচার করে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। ফুটপাতে ছোটদের পর্ণ নিয়ে বসেছেন তাপস, বলেন, বেচাকেনা তেমন নেই। ঈদ উপলক্ষে যেমন বিক্রি হয়, তেমন নয়। ফুটপাতের বিক্রেতা মোজাম্মিল, আব্দুল আহাদসহ অনেকেই এমন কথা জানিয়ে বলেন, বিক্রি মোটামুটি আছে। আজ হয়তো বিক্রি বাড়তে পারে। এদিকে, সিলেটের অভিজাত এলাকা
কুমারপাড়ায় বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখছেন আরিফ আহমদ। দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নেয়ে বেরিয়েছেন। জানান, ঘুরে দেখছি, মেয়েদের জন্য জামা কিনেছি। ভালো লাগলে নিজেদের জন্যও কিছু কিনবো। ‘ছোটদের জন্য ঈদে কিছু না কিনলে না হয়, তাই বেরিয়েছি’ জানান সৈয়দ আহমদ। জিন্দাবাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কোরবানীর ঈদে মূলতঃ পশু ক্রয়ের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে পরিবারের চাহিদার জন্য কাপড় জুতা কিনতে বেরিয়েছেন। পণ্যের দাম স্বাভাবিকই আছে বলে জানান তিনি। তবে ঈদ কেন্দ্রিক বিক্রি নেই বললেই চলে বলে জানিয়েছেন মধুবন সুপার মার্কেটের সিটি শাড়ি সেন্টারের নুর আহমদ। তিনি জানান, ক্রেতাদের উপস্থিতি গত দুই দিন থেকে বেড়েছে। তবে বেচাকেনা স্বাভাবিক পর্যায়ের রয়েছে। সুতি শাড়ি কিছু বিক্রি হচ্ছে। কাতান, বেনারসি, জর্জেট, সিল্ক শাড়ির বিক্রি নেই বলেই চলে। মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের বাহারী ড্রেস এর পসরা সাজিয়ে বসেছে প্যারিস গার্মেন্টস।
তারা জানান, অন্য বছরের ঈদুল আজহার সময়ের তুলনায় বিক্রি কম। অন্য বছরের ঈদের ১০দিন পূর্বে যেরকম ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিলো, এবার ঈদের ৩ দিন পর্বেও সেই রকম রয়েছে। তিনি জানান, আবহাওয়াগত কারণে বৃষ্টির জন্য ক্রেতাদের উপস্থিতি কম হয়ে থাকতে পারে। ছেলে মেয়েদের জুতার শোরুম ‘নিউ সু প্যালেস’ এর স্বত্বাধিকারী আহমদ সাব্বির বলেন, ঈদ উৎসবে আমাদের বেচাকেনা ভালো হয়। তবে
ঈদের বাজারের জমজমাট অবস্থা এখনো শুরু হয়নি। ছেলেদের জুতা ৫০০ থেকে ২৫০০ টাকায় এবং মেয়েদের জুতা ৮০০ থেকে ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আজকে ক্রেতাদের উপস্থিতি আরো বাড়তে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে ক্রেতাদের অধিকাংশই কোরবানীর পশু ক্রয়ের বিষয়টি এই ঈদে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করে বলেন, সুযোগ পেলে ভালো কাপড় জুতা কেনার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন।