‘লালদিঘিরপাড়ে হকার শেডে লাগবে না ভাড়া’
হকারমুক্ত হবার পথে নগরী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৩:৫১:৩২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মেনে সিলেট মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে দিয়েছেন হকাররা। গতকাল রোববার নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে হকারদের দেখা যায়নি। ফলে, গতকাল নগরীতে ছিল অন্যরকম আবহ। দখলমুক্ত সড়ক ও ফুটপাতের ফলে যানজটও কমে গেছে অনেকটা। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। এই অবস্থা অব্যাহত রাখার দাবি জানেয়েছেন তারা।
এদিকে, নগরীর যানজট নিরসন ও সড়ক-ফুটপাত হকারমুক্ত করার লক্ষ্যে লালদিঘিরপাড়ে অস্থায়ী হকার শেড তৈরি করে দিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। ভ্রাম্যমাণ হকারদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত অস্থায়ী বাজারে কোনোরকম ভাড়া ছাড়াই ব্যবসার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে হকাররা এখানে আসতে শুরু করেছেন। গতকাল রোববার অনেক হকারকে তাদের পসরা দিয়ে হকার শেডে বসতে দেখা গেছে। নগরভবনের ঠিক পেছনে লালদিঘির পাড় মাঠে নতুন দশটি গলিতে ইট, বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী শেড নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন রাস্তা ও ড্রেন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে টয়লেটও। বাজারে প্রবেশের জন্য রয়েছে তিনটি প্রবেশপথ। কাঁচা বাজার, মাছ বাজার, কাপড়ের দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসার জন্য সাইনবোর্ড টানিয়ে স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সিসিকের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। হকারদের সচেতন করতে সিসিক ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিংসহ প্রচার কাজ চালানো হয়েছে।
গতকাল দুপুরে নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজার, লামাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার ও তালতলা এলাকায় ফুটপাত ও সড়কে হকারদের দেখা মিলেনি। তবে এসব এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা হেঁটে হেঁটে এসব এলাকায় টহল দিয়েছেন। সন্ধ্যার পর নগরের জিন্দাবাজার এলাকা পরির্দশন করেন পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার ও সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: সারওয়ার আলম। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গতকাল নগরীর সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একযোগে অভিযান চালানো হয়। এতে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নেন।
তবে তার আগেই হকাররা সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে চলে যান। এর আগে শনিবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার সকাল থেকে নগরীর কোনো সড়ক বা ফুটপাতে হকার বসতে দেওয়া হবে না। এ নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেন, নগরী যানজটমুক্ত করতে এবং সিলেট নগরীর বাসিন্দাদের নির্বিঘ্ন চলাচলের স্বার্থে আমরা ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের ব্যবসার জন্য লালদিঘির পাড়ে অস্থায়ী শেড তৈরি করে দিয়েছি। ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আশা করি এখন হকাররা নগরীর রাস্তা ও ফুটপাত ছেড়ে লালদিঘিরপাড়ে চলে আসবেন। আমরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনো ভাড়াও নিচ্ছি না। কাউকে কোনো টাকা দিতে হবে না। সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, লালদিঘির পাড় মাঠে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাইকে সেখানে চলে যেতে হবে। নগরের ব্যস্ততম এলাকার সড়কে হকারদের বসতে দেওয়া হবে না। বসলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনার ফলে দীর্ঘদিন ধরে সিলেট নগরীতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। এর ফলে নগরবাসীর হাটাচলায়ও প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছিল।




