ফিলিস্তিন সংহতি দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ নভেম্বর ২০২২, ৭:৫৯:২৩ অপরাহ্ন

ফিলিস্তিন সংহতি দিবস আজ। এটি ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশের আন্তর্জাতিক দিবস। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ নভেম্বর মাসের ২৯ তারিখ ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রদর্শনস্বরূপ ‘আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। এর দশ বছর পরে ১৯৮৭ সালের আজকের এই দিনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘ইউনাইটেড নেশনস পার্টিশন প্ল্যান ফর প্যালেস্টাইন’ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এরপর থেকে এ দিনটি ‘আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ফিলিস্তিনীরা লড়াই করছে দীর্ঘদিন ধরে। ফিলিস্তিন মধ্যপ্রাচ্যের দক্ষিণাংশের একটি ভূখণ্ড, যা ভূমধ্যসাগর ও জর্ডান নদীর মাঝে অবস্থিত। এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা এই তিন মহাদেশের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানে রয়েছে ফিলিস্তিন। এটি ইহুদি ধর্ম ও খ্রিস্টধর্মের জন্মস্থান। আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত ফিলিস্তিনের এই সম্পূর্ণ ভূ-খণ্ড বা এর কোন কোন অংশ বিভিন্ন রকমের মানুষদের দ্বারা পরিচালিত ও শাসিত হয়ে আসছে। ফিলিস্তিন অঞ্চলটি পৃথিবীর প্রাচীন অঞ্চলগুলোর একটি যেখানে মানুষের বসবাস, কৃষিনির্ভর জনসমষ্টি ও সভ্যতা গড়ে ওঠেছিলো। স্মরণ করা যেতে পারে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন ছিলো তুরস্কের উসমানিয়া সাম্রাজ্যের অধীন। ইংরেজদের ষড়যন্ত্রে তুরস্কের মুসলিম খেলাফত ভেঙে যায় এবং ইরাক, সিনাই উপত্যকা, ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম দখল করে নেয় বৃটিশ বাহিনী। ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, জর্ডান ও লেবানন চলে যায় ইংল্যান্ড-ফ্রান্সের দখলে। ১৯১৭-এর নভেম্বরে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সেই রাষ্ট্র এখনও প্রতিষ্ঠিত হয় নি। পরবর্তীকে ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়া হয়। আর এই ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রাধিকারের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত আছে বাংলাদেশও।
সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে একটি সার্বভৌম, স্বাধীন ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে। আর ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জোরালো আদেশের নিরিখেই প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়া, বাংলাদেশের সংবিধানে সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতা বা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ন্যায্য সংগ্রামে নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ রয়েছে। আমরা ফিলিস্তিনিসহ অন্য যেকোন দেশের নিরীহ মানুষের ওপর বেআইনি ও যুদ্ধংদেহী পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাই।