বিজয়ের মাস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ৪:৪৫:৪৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টর : ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশে বিধ্বস্ত হয় পাক বাহিনীর প্রায় সব বিমান। ভারতীয় জঙ্গী বিমানগুলো সারাদিন ধরে অবাধে আকাশে উড়ে পাক সামরিক ঘাঁটিগুলোতে প্রচন্ড আক্রমণ চালায়। অকোজো করে দেয় বিমানবন্দরগুলো। ভারতের বিমান বাহিনীর হিসাব মতে ১২ ঘণ্টায় ২৩২ বার তেজগাঁও এবং কুর্মিটোলা বিমান ঘাাঁটিতে ৫০ টনের মতো বোমা ফেলা হয়। পাকিস্তান বাহিনীর কনভয়ের ওপর ভারতীয় জঙ্গি বিমান আক্রমণ চালায়। এতে পাকিস্তানি বাহিনীর ৯০টি গাড়ি ধ্বংস হয়। এছাড়াও পাকিস্তানি বাহিনীর সৈন্য বোঝাই লঞ্চ স্টিমার ধ্বংস হয়। পাকিস্তানি নৌ বহরে সাবমেরিন ‘গাজী’ বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনীর যৌথ কমান্ডের সফল আক্রমণে ধ্বংস হয়।
একাত্তরের এই দিনে নৌবাহিনীর যৌথ কমান্ড চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সকল নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জাহাজকে বন্দর ত্যাগের পরামর্শ দেয়। যৌথ কমান্ড তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতেও অপারগতা প্রকাশ করে। এদিকে, লে. আরেফিনের নেতৃত্বে চালনা নৌ বন্দরে বড় ধরণের আক্রমণ পরিচালিত হয়। ভারতের ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশন আখাউড়ার যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সাথে মিলিত হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী আখাউড়ার দক্ষিণ এবং পশ্চিমাংশ দিয়ে অবরোধ করে। পাকিস্তানি বাহিনী অবশেষে আত্মসমর্পণ করে। ফলে আখাউড়া সম্পূর্ণরূপে শত্রুমুক্ত হয়। আগের দিন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব আনার প্রেক্ষাপটে ৫ ডিসেম্বর প্রস্তাব উত্তাপন করে সোভিয়েত ইউনিয়ন।
প্রস্তাবে বলা হয়, পূর্ব পাকিস্তানে এমন এক রাজনৈতিক নিষ্পত্তি প্রয়োজন যার অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবে বর্তমান সংঘর্ষের অবসান ঘটবে। এই প্রস্তাবে পোল্যান্ড সমর্থন করে। যথারীতি ভেটো দেয় চীন। অন্যরা বিরত থাকে ভোটদানে। এদিনই চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই ভারতীয় হামলার মুখে পাকিস্তানকে সর্বাত্মক সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। রাজনেতিক এ পরিস্থিতি মুক্তিযোদ্ধাদের যাতে দুর্বল না করে তোলে, তাই তাদের মনোবল বাড়াতে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি কর্ণেল ওসমানী জাতির উদ্দেশ্যে বেতারে ভাষণ প্রদান করেন।