ধার না নিয়ে ৫৯০ কোটি টাকা পরিশোধ করল ইসলামি ব্যাংকগুলো
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ৫:১৮:৩৯ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : গত সোমবার থেকে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের জন্য ‘ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটি (আইবিএলএফ) সুবিধা চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সুবিধা চালুর পর পরবর্তী দুই দিনে (মঙ্গলবার ও বুধবার) দেশের পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক ৫ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা ধার নিয়েছিল। তবে তৃতীয় দিনে (বৃহস্পতিবার) নতুন করে ধার না নিয়ে বরং ৫৯০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে ওই ব্যাংকগুলো। এতে বৃহস্পতিবার ইসলামি ব্যাংকগুলোর মোট ধারের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।
জানা গেছে, ‘ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটি (আইবিএলএফ)’ এর আওতায় প্রথম দুই দিনে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১৪ দিনের স্বল্পমেয়াদে মোট ৫২৪৭ কোটি টাকা ধার নিয়েছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার ধার নেয় ৩ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। আর বুধবার নেয় ১ হাজার ২৫২ কোটি টাকা।
এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড সবচেয়ে বেশি টাকা ধার নিয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংল্যাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, আমানত উত্তোলনের কারণে বেশ কযকেটি ইসলামী ব্যাংক এখনও তারল্য সংকটে ভুগছে।
ইসলামী ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “গত কয়েকদিনে আমাদের ব্যাংক থেকে কিছু করপোরেট আমানত তুলে নেওয়া হয়েছে, এর ফলে আমাদের তারল্য সংকটের দ্রুত অবনতি হয়েছে। অন্যদিকে, অনেক ছোট গ্রাহক নতুন আমানতও করেছেন।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “আমরা এখন গ্রাহকদের আরও ভাল সেবা দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আমাদের শাখা নেটওয়ার্কগুলো ভাল পারফর্ম করছে।”
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ব্যাংকের এমডি জানিয়েছেন, “এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তার মধ্যেও, কিছু ইসলামী ব্যাংক তাদের সংকট মোকাবিলায় সাধারণ ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের সন্ধান করছে, বিশেষ করে যাদের তারল্যের অবস্থা ভালো, তারা কমপক্ষে তিন মাসের জন্য ঋণ চাইছে।”
তবে, সব ইসলামী ব্যাংকই তারল্য সংকটে নেই বলেও দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “আমাদের কাছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে, যে কারণে আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তার প্রয়োজন নেই।”
“এছাড়াও, আমরা সাম্প্রতিক সময়ে অন্যান্য ব্যাংককে বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছি,” যোগ করেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদী ঋণের জন্য মূলত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের উপর নির্ভর করত, তবে বৃহত্তম এই ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক তারল্য সংকটের কারণে ওই ব্যাংকগুলো সমস্যায় পড়েছে।
গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এই তারল্য সুবিধা চালুর আগে ইসলামি ব্যাংকগুলো একে অপরের কাছ থেকেই ঋণ নিচ্ছিল।