৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মৃতি পরিষদের আলোচনা সভা
হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে আজীবন বেঁচে থাকবেন …….রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ৫:৪৮:৫২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছিলেন দক্ষ কূটনীতিক, আমলা ও রাজনৈতিক। শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর অবদান জাতির কাছে চির অম্লান হয়ে থাকবে। কর্মের মাধ্যমে তিনি আমাদের মাঝে আজীবন বেঁচে থাকবেন।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর মেন্দিবাগস্থ জালালাবাদ গ্যাস ভবনের সভাকক্ষে স্পিকার আলহাজ্ব হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভার্চুয়ালি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ইনাম আহমদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বরেণ্য কূটনীতিকের পাশাপাশি হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছিলেন একজন আদর্শ ও আধুনিক গণতান্ত্রিক মতবাদের অনুসারী ও প্রবক্তা। তিনি বলেন, তাঁর সাথে আমার সম্পর্ক ছিল আত্মিক। দীর্ঘদিন একসাথে কাজ করার সুবাদে, কাছ থেকে দেখা মরহুম চৌধুরীর বিভিন্ন কর্মকান্ডেরও প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি। জাতীয় সংসদকে ক্ষমতায়ন ও শক্তিশালীকরণে কিছু যুগান্তকারী পদ্ধতির প্রবর্তন করেন তিনি। একজন কূটনীতিক হিসাবে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে, তিনি অসীম সাহসিকতায় পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে, জনমত গঠন ও বাংলাদেশের স্বীকৃতির জন্য ৪০ টিরও বেশি রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেছিলেন।
তিনি বলেন, স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯৭২ সালে জার্মানিতে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। লোভ, মোহ কিংবা জীবনের ঝুঁকি কিছুই তাকে ন্যায়পরায়ণতা ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর দূরদর্শী ও কুশলী কূটনীতিক হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর কন্যাদের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দিল্লীতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট সকলকে তাঁর জীবনাদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়ার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মরহুম স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে বাংলাদেশের আলোকিত মহাপুরুষ আখ্যায়িত করে বলেন, জীবনে তাঁর প্রতিটি কর্মযজ্ঞ ছিলো দেশ, জাতি ও মানুষের কল্যাণে। তাঁর নেতৃত্ব ও কূটকৌশলের ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসন অলঙ্কৃত করেছে। ’৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিদেশের মাটিতে থাকা বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে নিরাপদ রাখার জন্য তাঁর যে ভূমিকা- সেটা ছিলো ‘বাঘের বেটার মতো’। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য সাবেক সচিব ইনাম আহমদ চৌধুরী বলেন, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী নিঃসন্দেহে একজন অনন্য সাধারণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন সফল কূটনৈতিক, রাজনৈতিক প্রাজ্ঞ এবং দূরদর্শী।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ছোট বোন জেবা রশীদ চৌধুরী, সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খাঁন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও আজীবন সদস্য মাহসুন নোমান রশিদ চৌধুরী ও সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন স্মৃতি পরিষদ সদস্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম এবং আবৃত্তি প্রশিক্ষক নাহিদা খানম সুবর্ণী। শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফিজ মাওলানা আবিদ হাসান।
এছাড়া, উপস্থিত ছিলেন বিটাকের মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী(অতিরিক্ত সচিব), স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক স্বাধীন বাংলা পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আখলাকুল আম্বিয়া, পরিষদের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জাফর রাজা চৌধুরী, মিসেস দুরদানা দিলিয়া, এইচআরসিএমসি’র সিলেট শাখার সদস্য সচিব মাহবুবুল হাফিজ চৌধুরী মুশফিক, আজীবন সদস্য কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, মনজুর আহমদ চৌধুরী, দৈনিক স্বাধীন বাংলার নির্বাহী সম্পাদক মোঃ মাহবুবুল আম্বিয়া, ফজলে এলাহী সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার কয়েক শতাধিক লোক।